বড়জোড়া, বেলিয়াতোড় ও সোনামুখীর জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন গ্রাম থেকে পরীক্ষার্থীদের ওই গাড়িতে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে, আর পরীক্ষা শেষে বাড়িতে তাদের পৌঁছে দেওয়াও হবে ওই গাড়িতে করেই, বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে বাঁকুড়া (Bankura) উত্তর বন বিভাগের বিভিন্ন জঙ্গলে ৭৪ টি হাতি অবস্থান করছে। আর তাই পরীক্ষার্থীদের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা বলে বন দফতর সূত্রে খবর।
বড়জোড়ার ডাকাইসিনী, পাবয়া, কালপাইনি গ্রামের পরীক্ষার্থীরা আট কিলোমিটার দীর্ঘ জঙ্গলপথ পেরিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে গদারডিহি হাই স্কুলে। তাই সাত সকালেই গ্রামে হাজির হয় বন দফতরের গাড়ি। এই বিষয়ে ডাকাইসিনী গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাণী সিংহ বলেন, “হাতির ভয় তো ছিলই, তবে বন দফতর গাড়ির ব্যবস্থা করায় ভয় কিছুটা কমেছে। তবে আমাদের এই এলাকায় আমরা সারাবছরই হাতির আতঙ্কে থাকি”।
এই বিষয়ে বেলিয়াতোড়ের রেঞ্জার মহিবুল ইসলাম বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা তো করা হয়েছেই, সঙ্গে জঙ্গল পথে প্রশিক্ষিত হুলা পার্টির সদস্যরা ও পুলিশ লাগাতার টহল দিচ্ছে। অন্যান্য জায়গার সঙ্গেও আমরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছি। হাতির গতিবিধি সম্পর্কেও খোঁজ রাখা হচ্ছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ভয়ের কোনও কারন নেই”।
এই বিষয়ে বন দফতরের গাড়ির চালক মানস মণ্ডল বলেন, “হাতির আতঙ্কে সারাবছরই কাজ করতে হয়। কিন্তু এই বছর নজরদারি বেশি কারন প্রায় ৭৪ টি হাতি এলাকায় অবস্থান করছে। তাই বন দফতর থেকে কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। যে কদিন মাধ্যমিক পরীক্ষা চলবে, ততদিন পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেওয়া হবে”।
বন দফতরের এই ব্যবস্থায় রীতিমতো খুশি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দীপ তেওয়ারি। তিনি বলেন, “কিভাবে এত দূরে পরীক্ষা দিতে যাব সেই আতঙ্কে ঘুম উড়েছিল। কিন্তু বন দফতর এত সুন্দরভাবে সবকিছু ঠিকঠাক করায় আতঙ্ক কিছুটা হলেও কেটেছে। এবার আতঙ্কমুক্ত হয়ে পরীক্ষা দিতে পারব”।