রাজ্যের কোথায় কোথায় জনসভা করবেন অমিত শাহ (Amit Shah), জগৎপ্রকাশ নাড্ডারা (Jagat Prakash Nadda) – এ নিয়েও মতবিরোধী গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন, সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে, এমন বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতেই শীর্ষ নেতাদের সভা হোক। যাতে অন্তত ফাঁকা মাঠে বক্তৃতা দিতে না হয় হেভিওয়েটদের।
আর রাজ্য বিজেপি নেতারা চাইছেন, সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল এলাকায় জনসভা করুন শাহ-নাড্ডারা। যাতে শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতি ওই এলাকায় দলীয় সংগঠন মজবুত করার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে তিনটি জনসভা করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর, নদিয়ার নাকাশিপাড়া এবং বর্ধমানের পূর্বস্থলী উত্তরে।
তিন এলাকায় বিজেপির সংগঠন ভালো অবস্থায় নেই। নাকাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ বুথে এখনও কমিটি গড়তে পারেননি সুকান্ত মজুমদাররা। কার্যত একই দশা রামনগর এবং পূর্বস্থলীতে। গোড়ায় ঠিক ছিল, নাকাশিপাড়ার সভাটি বিজেপির শক্তঘাঁটি কৃষ্ণনগর শহরে হবে। রামনগর এবং পূর্বস্থলী উত্তরের সভা দু’টি হবে কাঁথি ও কাটোয়ায়।
কাঁথিতে বিজেপির সংগঠন শক্তপোক্ত। কাটোয়াতেও গেরুয়া শিবিরের প্রভাব রয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কাটোয়া বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির লিড ছিল। কিন্তু ‘শক্তঘাঁটি’তে নাড্ডাকে দিয়ে সভা করিয়ে সংগঠনের লাভ কী হবে, এই প্রশ্ন ওঠে বঙ্গ-বিজেপির অন্দরে।
তার পরই সভাস্থল বদলে বেছে নেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট জেলার দুর্বল বিধানসভা কেন্দ্রগুলি। তবে সুকান্তদের এই পদক্ষেপে খুশি নন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নাড্ডার তিন সভার কোনওটিতেই খুব বেশি ভিড় হয়নি। রাজ্য বিজেপির এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘নাড্ডাজিরা ভরা মাঠে সভা করতে চান। মাঠ ফাঁকা দেখলে মেজাজ হারান।
কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্ব দুর্বল কেন্দ্রে সভা করতে না চাইলে ওই সব এলাকায় আমারা প্রভাব বিস্তার করব কী ভাবে!’ রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘নাকাশিপাড়া বা রামনগরে বহু বছর ধরে বিজেপি সক্রিয়।
বিজেপিকে বাংলার সর্বত্র এবং সর্বস্তরের মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবেই নাড্ডাজির সাম্প্রতিক তিনটি সভা নাকাশিপাড়া, রামনগর এবং পূর্বস্থলীতে হয়েছে।’ সব ঠিক থাকলে এ বছর বাংলায় আরও ন’টি জনসভা করবেন নাড্ডা। শাহের করার কথা ১২টি। এখন প্রশ্ন, সেই সভাগুলি হবে কোথায়? রামনগর এবং পূর্বস্থলীর সভার পর দিল্লি ফিরে নাড্ডা কিন্তু বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর।