CPIM West Bengal : নজিরবিহীন আর্থিক বৈষম্যের অভিযোগ, রাজ্যের একমাত্র CPIM পরিচালিত পঞ্চায়েতের কী অবস্থা? – radhakantapur of south 24 parganas is the only panchayat led by cpim in west bengal


৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসানের পর বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। রাজ্যে ঘটেছিল বড় পালাবদল। ধীরে ধীরে কমতে কমতে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে (2021 West Bengal Assembly Election) কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল বামেরা। বিধানসভায় বাম বিধায়কের সংখ্যা এখন শূন্য। পশ্চিমবঙ্গে যা কার্যত নজিরবিহীন। আর তারপর থেকেই ক্রমশ ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে লাল পার্টি। কিন্তু, বামেদের এই দুর্দিনেও রাজ্যের একমাত্র CPIM পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত হিসেবে রাধাকান্তপুর আশার আলো জিইয়ে রেখেছে তাদের জন্য। বিগত পাঁচ বছরে কেমন আছে এই পঞ্চায়েতের মানুষরা? খোঁজ নিল এই সময় ডিজিটাল

CPIM : পঞ্চায়েত ভোটের আগে বড় ধাক্কা, কাঁথিতে TMC-BJP ছেড়ে CPIM-এ যোগদানের হিড়িক

কেমন আছে রাধাকান্তপুর?

নির্বাচন আসে, নির্বাচন যায়। কিন্তু, ভোটাধিকার প্রয়োগ করা মানুষগুলোর আশা কি পূর্ণ হয়? রাখা হয় ভোট চাইতে এসে দেওয়া একটাও প্রতিশ্রুতি? জবাবে হতাশা ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না রাধাকান্তপুরের মানুষগুলোর মুখে। গত ১০ বছর ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাধাকান্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েত (Radhakantapur Panchayat) লাল ঝাণ্ডাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। তাতে কতটা উন্নতি হয়েছে গ্রামের মানুষগুলোর?

পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজনের মধ্যে মিলল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বহু মানুষ বাম পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে খুশি। কিন্তু, অনেকেরই আবার অভিযোগ, এই পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও বজায় রয়েছে আলোর সমস্যা। বর্ষাকালে রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়। শুকিয়ে যাওয়া মনি নদীর জেরে মাইলের পর মাইল চাষের জমি জলের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়।

Co Operative Election: পঞ্চায়েত ভোটের আগে তেহট্টের সমবায়ে ভরাডুবি TMC-র, কারণ নিয়ে মুখ খুলল শাসকদল
পঞ্চায়েত দখলের অভিযোগ CPIM-এর

বিগত ১০ বছর ধরে এই পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে CPIM। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুর দু’নম্বর ব্লকের অন্তর্গত রাধাকান্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। এই পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের মধ্যে CPIM-এর দখলে ৯টি, তৃণমূলের দখলে ৩টি এবং SUCI পেয়েছে দু’টি আসন। জোর করে সদস্যদের ভয় দেখিয়ে পঞ্চায়েত দখল করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধান চম্পা বৈদ্যর। এই সময় ডিজিটালকে তিনি বলেন, “বোর্ডকে কোনও কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। টাকা দেওয়া হচ্ছে না। বিডিও অফিসে গেলেও আমায় গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কিছু বলতে দেওয়া হয় না।” একই অভিযোগ করেছেন এলাকার CPIM নেতা রনজিত নস্করও। তাঁর বক্তব্য, “এই জেলায় বিধায়ক, সাংসদ সকলেই তৃণমূলের। একমাত্র পঞ্চায়েত যা CPIM পরিচালিত। আর তাই এলাকার উন্নয়নে কোনও আর্থিক সাহায্য করা হয়নি। রাস্তাঘাট থেকে আরম্ভ করে নিকাশি ব্যবস্থা এলাকার মানুষের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করা এইরকম অনেক উন্নয়নের কাজই থমকে আছে টাকার অভাবে।”

West Bengal Panchayat Election 2023 : ব্যালট বক্সের কারচুপি রুখতে থাকছে QR কোড, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু কমিশনের
অনুদান নিয়ে বৈষম্য?

CPIM পরিচালিত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতে আর্থিক অনুদান নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ রয়েছে। পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ করার প্রমান আছে বলে অভিযোগ রাধাকান্তপুর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নিমাই চাঁদ গায়েনের। এই সময় ডিজিটালকে তিনি পালটা বলেন, “বিরোধীদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কোনও পরামর্শ করা হয় না। এমনকী পরিকল্পনাও করা হয় না। প্রধান নিজের বাড়ির সামনের রাস্তা তৈরি করেছেন। আরেক পঞ্চায়েত সদস্যও তাঁর বাড়ির সামনে রাস্তা তৈরি করাচ্ছিলেন। আমরা এর বিরোধিতা করেছি। বিধায়ক ও সাংসদের পঞ্চায়েতকে টাকা দেওয়ার নিয়মই নেই।”

Sagardighi By Election : সাগরদিঘির কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, মিথ্যে অভিযোগ দাবি দলের
এদিকে, SUCI-এর পঞ্চায়েত সদস্য জনার্দন হালদার বলেন, “উন্নয়ন থমকে আছে। কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গরিব মানুষকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। অথচ তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা নানা ভাতা ও অনুদান পাচ্ছেন।” রাজনৈতিক এই কাদা ছোড়াছুড়িতে এলাকার উন্নয়ন থমকে রয়েছে, সেই অভিযোগ গ্রামবাসীদেরও। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। বিগত ১০ বছরের এই অনুন্নয়নকেই এবার ভোটের প্রচারের হাতিয়ার করতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। অন্যদিকে, নিজেদের গড় ধরে রাখতে মরিয়া CPIM-ও। তবে শেষ পর্যন্ত কারা সফল হবেন তা জানার জন্য আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *