এবার এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানই বয়কটের ডাক দিয়ে পোস্টার পড়ল বিশ্বভারতীর বাইরে। যেখানে লেখা ‘পলিটিক্যাল কনভোকেশন’। কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছেন, তা না জানা গেলেও ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান এই পোস্টারের কাজ প্রাক্তনীদের। কারন, এদিন সকালে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রাক্তনীদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পোস্টার কাণ্ডের জেরেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। পরে অবশ্য কয়েকজন প্রাক্তনীকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। কিন্তু যাদের সঙ্গে ব্যাগ বা মোবাইল ফোন ছিল তাদেরকে কোনোভাবেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপরেই দেখা যায় বিশ্বভারতীতে পোস্টার পড়েছে যেখানে সমাবর্তনকে রাজনৈতিক বলে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে BJP সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (MP Locket Chatterjee) বলেন, “রবীন্দ্রনাথ কারোর একার নন, বিশ্বভারতীও কারোর একার নয়। এখানে যে কোনও দলের প্রতিনিধিরা আসতে পারেন, আমরাও এসেছি। আর এই ধরনের কথা বা পোস্টার তাঁদের মুখে মানায় না যারা রাজ্যের সব থানাগুলিকে নিজেদের পার্টি অফিস বানিয়ে রেখেছেন”।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে যোগ দেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)। তার উপস্থিতিতে শুক্রবার সকালেই নির্ধারিত সময়ে শুরু হয় বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিংয়ের পাশাপাশি ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুভাষ সরকারও।
এখানেই বিতর্ক উস্কে দেয় BJP-র স্থানীয় নেতৃত্ব। রাজনাথকে বরণ করতে হাজির হন BJP-র নেতা কর্মীরা। যা দেখে যারপরনাই ক্ষুব্ধ হন প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে প্রবীণ আশ্রমিকরা। বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিকে এভাবে কোনও রাজনৈতিক দল বরণ করতে পারে কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এরপরেই বিতর্ক চরমে ওঠে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ‘VC বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দূর হঠো’—স্লোগান লেখা পোস্টারে।
২০১৯ সালে উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের জন্য শেষ বার প্রকাশ্যে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেবার এসেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এর পর করোনা মহামারির কারণে পর পর তিন বছর সমাবর্তন অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। আর এবার বছর তিনেক পর অনুষ্ঠান ফের শুরু হতেই তুঙ্গে উঠল বিতর্ক।