জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শীতের পরে আসে বসন্ত। আর বসন্তে আসে রঙের উৎসব। ফাল্গুন বা চৈত্রে হয় এই দোলযাত্রার উৎসব। এই সময়ে প্রকৃতিতে আসে নতুন প্রাণের তরঙ্গ। গাছে গাছে ফুল, ডালে ডালে নতুন পাতা, কুয়াশার আবরণ ভেদ করে নীল আকাশে ওঠে উজ্জ্বল রোদ, পাখি ডাকে। শীতের জড়তা কেটে গিয়ে জীবনের উষ্ণতার আবেশ যেন ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এই সবটা নিয়েই বসন্তের আনন্দ-যাপন। আর সেই আনন্দ-যাপনকেই বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় দোলযাত্রা বা হোলি বা বসন্তোৎসব। রঙে রঙে রংমশাল জ্বালার লগ্ন এই বাসন্তিক উৎসব। এই লগ্ন প্রেমেরও। শীতের শুষ্কতা কেটে গিয়ে প্রাণে আসে প্রেমের লাবণ্যজোয়ার। প্রেমে-গন্ধে-ছন্দে-গানে-কাব্যে প্রাণে প্রাণে রচিত হয় নবজীবনের নতুন স্তোত্রমালা।
আরও পড়ুন: Panch Yog 2023: ৭০ বছর পরে ফের পাঁচ মহাযোগের মিলন, বিরল এই ঘটনা ৪ রাশির জীবনে আনবে আর্থিক সমৃদ্ধি
এ বছর কবে দোল
এই বছর দোলযাত্রা বা দোলপূর্ণিমার তিথি পড়ছে ৭ মার্চ (বাংলা ক্যালেন্ডারে ২২ ফাল্গুন) মঙ্গলবারে।
তবে পূর্ণিমা পড়ে যাচ্ছে আগের দিন ৬ মার্চ সোমবার বিকেল থেকেই। এদিন বিকেল ৪টে ১৮ মিনিটে পূর্ণিমার তিথি শুরু। পূর্ণিমা থাকছে পরদিন ৭ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধে ৬টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: Budh Shani Yuti 2023: ৩০ বছর পর ফের গ্রহের এত বড় মিল! এই রাশির জাতকরা পাবেন প্রচুর অর্থ-খ্যাতি
কবে হোলি
দোল খুব বেশি করে বাংলার। আর হোলি সর্বভারতীয়। হোলি সাধারণত দোলের পরের দিন পালিত হয়। সেই হিসেবে এবছর হোলি পড়ছে ৮ মার্চ, বুধবার (বাংলায় ২৩ ফাল্গুন)।
হোলির শুভ সময়
ফাল্গুন শুক্লা পূর্ণিমা ৬ মার্চ বিকাল ৪টে ১৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড থেকে শুরু হবে, ৭ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ৪০ পর্যন্ত থাকবে।
হোলিকা দহন কবে ও কখন
হোলিকা দহন সাধারণত দোলের আগের দিনে হয়। হোলিকা দহনের শুভ সময় ৬ মার্চ বিকেল ৪টে ১৭ মিনিট থেকে ৭ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ৯ মিনিট পর্যন্ত।
হোলিকা দহন বা ছোটি হোলি হল পুরনো বা অশুভের উপর নতুন বা শুভের জয়। এদিন অনেকেই তাদের বাড়ির পুরনো জিনিসপত্র সব আগুনে দেন। শীতের জড়তা কাটিয়ে প্রাণের উজ্জীবনের লগ্ন এই হোলিকা।
আর দোল হল প্রেমের লগ্ন। এর সঙ্গে রাধাকৃষ্ণের প্রেমের অনুষঙ্গ রয়েছে। মথুরা বৃন্দাবন ব্রজভূমির আকাশে বাতাসে এসময়ে রাধা ও কৃষ্ণের প্রেমের আবেশ যেন আজও ছড়িয়ে থাকে। বাতাসে প্রেমের রেণু। চাঁদের কিরণে সেই প্রেমের মাধুর্য যেন আরও বেশি কোমল ও কান্ত হয়ে ওঠে।
দোলের দিন বা হোলির দিনে রঙ-খেলা হল এক বিশেষ ব্যাপার। এদিন আত্মীয়, প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে হোলিখেলা হয়। প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যেও গোপন রঙখেলার উষ্ণ মাধুর্যের পরিসর থাকে। আজও কোনও তরুণ তার ভালো-লাগা কোনও তরুণীকে দোলে বা হোলির দিনে রং দিয়ে প্রেমের বার্তা দেয়। ভারতীয় ঐতিহ্যে, এদেশীয় সমাজ-সংস্কৃতিতে এখনও এই ইশারার স্বীকৃতি গ্রাহ্য।