গত চার পাঁচদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল কুশন। স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল তার। কিন্তু জ্বর কমছিল না। শনিবার রাতে ওই কুশন হঠাৎই রক্তবমি শুরু করে। তড়িঘড়ি রাতেই কুশনকে তার বাড়ির লোক হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
কিন্তু অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতা ফুলবাগানের কাছে শিশু হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে। পরিবারের কথায়, শিশু হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকায় সেখানকারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই শিশুকে ভর্তি করা হয়। রাতে তাকে দু’বোতল রক্তও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি।
রবিবার সকালে বেসরকারি ওই হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়। মৃত্যু সংবাদ এলাকায় পৌঁছতেই পরিবার ও পড়শিদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কান্নার রোল পড়ে যায় এলাকায়। তবে ওই শিশুর চার পাঁচ দিন ধরে টানা জ্বর থাকা সত্ত্বেও নিকটবর্তী কোনও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না নিয়ে গিয়ে কেন তাকে বাড়িতে রাখা হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
চিকিৎসকদের একাংশ পরিবারের সদস্যদের সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন। যা নিয়ে অবশ্য এখন আফসোস করছেন পরিবার থেকে পড়শিরা। ঘটনার খবর পেয়ে ওই শিশুর বাড়িতে পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিলার দীপক দে। তিনি বলেন, ‘প্রথমেই যদি বাচ্চাটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হতো তাহলে হয়তো এমনটা হতো না। সকলের কাছে আমার অনুরোধ, বাড়ির বাচ্চার জ্বর সর্দি কাশি হলে সাথে সাথে স্থানীয় হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে।’
ক’দিন পরেই ছিল কুশনের জন্মদিন। দিনমজুর বাবা জয়ন্ত কর্মকার-সহ পরিবারের অন্য সদস্যদের ইচ্ছা ছিল ঘটা করেই ছেলের জন্মদিন পালন করা হবে। কিন্তু তার আগে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শুধু পরিবার নয়, গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।