জবাবে কোথাও বিজেপি নেতাদের পথে নামতে দেখা যায়নি। রবিবার কিছু থানার বাইরে প্রতীকী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হলেও তা নাম-কে-ওয়াস্তে বলেই ঘনিষ্ঠ মহলে কবুল করেছেন গেরুয়া শিবিরের অনেক শীর্ষ নেতাই। তবে নিজেরা পথে না নামলেও রাজ্যের শাসকদলের মন্ত্রীদের রাস্তায় দেখলে বেঁধে রাখার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
যা দেখে হুগলির এক বিজেপি নেতার মন্তব্য, ‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে নেতারাই আক্রান্ত হচ্ছেন। তার কোনও প্রতিবাদ হচ্ছে না। শুধু মুখে বড় বড় কথা বলছেন দিলীপ ঘোষরা। এর পর কোন ভরসায় কর্মীরা মাঠে নামবেন?’
সম্প্রতি নিশীথের বাড়ির বাইরে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের জবাবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে তাঁরা দ্বিগুণ লোক নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘেরাও করবেন। সুকান্তই শনিবার তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। একই দিনে নিশীথের গাড়িতেও হামলার অভিযোগ উঠেছে।
তাঁদের হয়ে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। দিলীপের হুঁশিয়ারি, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গাড়িতে হামলা হচ্ছে। পার্টির রাজ্য সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে।
আমরাও মুখ্যমন্ত্রী-সহ রাজ্যের সব মন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করতে পারি। মন্ত্রীরা রাস্তায় বেরোলে গাছে বেঁধে রাখতে পারি। তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করছে। বিজেপি এই রাজনীতি করে না। কিন্তু বাধ্য করলে মন্ত্রীদের রাস্তায় পেলে গাছে বেঁধে রাখব।
আমাদেরও লোকবল আছে।’ যদিও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, ‘দিলীপ ঘোষ এলোমেলো কথা বলছেন। বিজেপি আশান্তি পাকাতে চাইছে। উল্টে তৃণমূল কর্মীরাই এলাকা শান্ত রাখার চেষ্টা করছেন।’
হামলা এবং পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারির তরজার পাশাপাশি বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বকে চিন্তায় রেখেছে নিচুতলার কর্মীদের মনোবল। কারণ, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘোরা দলের প্রথম সারির নেতারাই এত দিন ছিলেন তৃণমূলস্তরের কর্মীদের ভরসার জায়গা। এমনকী, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়েও উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে একজন করে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া নেতাকে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব।
তবে ইদানীং ওই নেতারাই যে ভাবে বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন, তাতে কোন ভরসায় পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীরা তাঁদের সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিতে যেতে রাজি হবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হয়েছে। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিজেপি মতাদর্শ নির্ভর পার্টি। বিজেপি কর্মীরা নেতার মুখ দেখে রাজনীতি করেন না, আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য করেন। তৃণমূলের এই ঔদ্ধত্য, অনৈতিকতা নিকট ভবিষ্যতে খড়কুটোর মতো ভেসে যাবে। মানুষই এ সব বরদাস্ত করবে না।’