তবে তিনি এ দিন সাগরদিঘি গিয়েছিলেন, তা লালগোলার বিধায়ক মেনে নিয়েছেন। মহম্মদ আলি ছাড়াও ফরাক্কার তৃণমূল নেতা মইনুল হক চৌধুরীও এ দিন নির্বাচনী বিধি ভেঙে সাগরদিঘিতে হাজির হন বলেও কংগ্রেস দাবি করেছে। যদিও তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল পাল্টা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে ‘টাকা বিলি’ করার সংস্কৃতির মূল হোতা বলে অভিযোগ করেছেন।
কানাইয়ের সাফ কথা, ‘এই অভ্যেস অধীর চৌধুরীর রয়েছে। নবগ্রামে অধীর প্রথম ভোটে দাঁড়িয়ে এই কাজ করেছিলেন। বাইরে থেকে বাহিনী এনে ভোটে জিততে চেয়েছিলেন। তৃণমূল এ ভাবে ভোটে জিততে রাজি নয়।’ তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য, অভিষেক বন্দ্যোপধ্যায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের যে বার্তা দিয়েছেন, সেই পথেই জোড়াফুলের নেতা-কর্মীরা চলছেন।
যদিও অধীর এ দিন বলেন, ‘তৃণমূলের নেতারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা, শাড়ি ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করছে। তৃণমূলের মস্তানদের বাইরে থেকে এনে ভোট লুট করার পরিকল্পনা করেছে।’ নির্বাচন কমিশনেও এ দিন কংগ্রেসের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। আলি ও মইনুলের সাগরদিঘি ‘সফর’কে হাতিয়ার করেই কংগ্রেস জোড়াফুলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।
এ দিন সাগরদিঘির গৌরীপুরে আলি গেলে তাঁকে কংগ্রেস কর্মীরা ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। কিছুক্ষণ পর সেখানে মইনুল হাজির হলে তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূলের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে ‘টাকা বিলি’ করার অভিযোগ করছেন।
পরে পুলিশ দুই নেতাকে সরিয়ে নিয়ে যায়। যদিও ‘এই সময়’ এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। সাগরদিঘির কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলি এবং ফরাক্কার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক চৌধুরী এসেছিলেন। ওঁরা প্রচুর টাকা বিলি করেছেন। মানুষকে হুমকি দিয়েছেন। কংগ্রেস জয়ী হবে বুঝেই তৃণমূল এই কাজ করেছে।’
যদিও ‘টাকা বিলি’র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আলি। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি সাগরদিঘিতে গিয়েছিলাম এটা ঠিক। কিন্তু কোনও টাকা বিলি করিনি। আমার লালগোলা বিধানসভার একটা বুথে যেতে হলে সাগরদিঘির উপর দিয়ে যেতে হয়। আমি যাওয়ার পথে বাথরুম করতে গাড়ি দাঁড় করিয়েছিলাম। তখন কংগ্রেসের লোকজন চিৎকার শুরু করে।’ মইনুল কি ছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে আলি বলেন, ‘আমাকে ঘিরে কংগ্রেসের লোকজন বিক্ষোভ দেখাচ্ছে শুনে মইনুল এসেছিলেন।
উনি দলীয় কাজে সাগরদিঘির উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন।’ এই যুক্তি খারিজ করেছে কংগ্রেসের জোট সঙ্গী সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘এত দিন টাকা দিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী, কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন টাকা বিলির অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনাগুলি বলছে, পরাজয়ের ভয় পেয়েছেন তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্ব।’