দীর্ঘদিনের দাবি রাস্তা ড্রেন, কিন্তু ৪০ বছরেরও বেশি সময় এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাননি তারা। কিন্তু সেই আশা ভরসা নিয়ে প্রতিবারই তারা ভোট দিয়ে থাকেন।এমনই এক ছবি দেখা গেল ইংরেজবাজার পুরসভার অন্তর্গত ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুলদীপ মিশ্র কলোনি, ডক পুকুর, তেলিপুকুর, জগন্নাথ কলোনি, সরস্বতী কলোনিতে।
এই এলাকাগুলিতে বিপুল অংশের মানুষের বসবাস। প্রতিনিয়ত তাদের এই সমস্যার সমাধান এখনও হয়নি। এলাকার মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবি হাইড্রেন থেকে নির্দিষ্ট রাস্তা।
বসবাসকারী এক পুর নাগরিক জানান, “আমরা নামেই পুরসভায় থাকি। আমরা পুরসভা থেকে কোনোরকম সুযোগ সুবিধা পাই না। আমাদের নির্দিষ্ট কোনও রাস্তা নেই, রেললাইনের উপর দিয়ে পারাপার করে আমাদের শহরে যেতে হয়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে কাজকর্ম, এমনকি কেউ অসুস্থ হলে তাকেও এই রেল লাইনের উপর দিয়ে চলাফেরা করতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকায় গাড়ি নিয়ে যেতে গেলে অনেক ঘুরে শহরে যেতে হয়। স্কুলের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। ট্রেন চলাচল করলে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল, নেই কোনও হাইড্রেন। দু-একটি ছোট ড্রেন রয়েছে, কিন্তু সেই ড্রেনের জল রাস্তার উপরে চলে আসে। সামান্য বৃষ্টিতেই গোটা পাড়া জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বাড়ির ভিতরে বাসনপত্র ধোয়া, কাপড় কাচা, এমন কি স্নান করার সময় সমস্ত নোংরা জল বাড়ির ভিতরেই ডোবা বা গর্ত করে ভিতর রাখতে হয়। সেই ডোবা বা গর্ত আবার ভরে গেলে সেই জল নিয়ে আবার অন্যত্র ফেলতে হয়।”
এলাকার মানুষের প্রশ্ন, কবে তারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন? সংশ্লিষ্ট ইংরেজবাজার পুরসভা থেকে জেলা প্রশাসনকে বলেও তাদের এই সমস্যার এখনও অব্দি সমাধান হয়নি। যদিও এই সমস্যার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন ইংরেজবাজার পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুজিত সাহা।
তিনি জানান, “হাইড্রেনের বিষয়ে ইতিমধ্যে ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান ও জেলা শাসকের কাছে আমি আবেদন করেছি। তারা জানিয়েছেন নিকাশী ব্যবস্থার জন্য হাইড্রেন করা হবে। তবে রাস্তার কাজ হচ্ছে, রাস্তার উপরে কিছু ইলেকট্রিক পোল রয়েছে। সেই পোলগুলিকেও সরানো হচ্ছে। একটি কালভার্ট রয়েছে, আরও একটি কালভার্ট তৈরি করা হচ্ছে। গাড়ি থেকে সাধারণ মানুষ যাতে যাতায়াত করতে পারে সেই বিষয়েও দেখা হচ্ছে। কিছু মানুষ সময় বাঁচানোর জন্য রেললাইনের উপর দিয়ে পারাপার করছেন।”
যদিও এই বিষয়ে পাল্টা দিয়েছে BJP। দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক BJP-র সহ সভানেত্রী মৌসুমী মিত্র জানান, “ইংরেজবাজার পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বহুদিন ধরে এলাকার উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা কোটি কোটি টাকা আসে উন্নয়নের জন্য কিন্তু সেই টাকা সঠিক উপায় কাজে লাগানো হচ্ছে না।এলাকায় রাস্তা নেই, নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল। এই ব্যর্থতা রাজ্য সরকারের।
আজকের সরকার খেলা, মেলা, চাকরি চুরি সেই সব নিয়েই ব্যস্ত। আজকে ধর্মতলা ধরনা তলায় পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের দিকে তাদের নজর নেই। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীদের উন্নয়ন আমরা দেখতে পাচ্ছি। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিষয় নিয়ে আমরা বহুবার ইংরেজবাজার পুরসভাকে বলেছি, কিন্তু কোনও কাজ এখনও হয়নি।”