মাশরুম ভিটামিন বি, ডি, পটাশিয়াম, কপার, আয়রন এবং সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ। এছাড়া মাশরুমে কোলিন নামক একটি বিশেষ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়, যা পেশীর সক্রিয়তা ও স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে খুবই উপকারী। মাশরুম অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এর মধ্যে বিশেষ হল এরগোথিওনিন, যা বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং ওজন কমাতে সহায়ক। বর্তমান সময়ে বেকারত্ব, মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান, সর্বোপরি দারিদ্র্য দূরীকরণে মাশরুম চাষ একটি সম্ভাবনাময় ফসল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তথা পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া মাশরুম চাষের জন্য অত্যান্ত উপযোগী। মাশরুম চাষের জন্য কোনও উর্বর জমির প্রয়োজন হয় না। ঘরের পাশের অব্যবহৃত জায়গায় ও বাড়ির মধ্যে মাশরুম উৎপাদন করা যায় সহজেই।
তমলুকের পিপুলবাড়িয়া, চাপবসান সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েকশো গৃহবধূ প্রতিদিন মাশরুম বিক্রি করে গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করছেন। রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এইসব গৃহবধূরা। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর ধরে মাশরুম চাষ করছেন। মাশরুম চাষের জন্য প্রয়োজন ধানের খড়। সেই খড় দিয়েই তৈরি হয় মাশরুম চাষের জন্য বেড। খড়এর সঙ্গে প্রতিটি স্তরে স্তরে দেওয়া হয় মাশরুমের বীজ। এক একটি বেড তৈরি করতে খরচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এক একটি বেড থেকে মাশরুম পাওয়া যায় ঘরে তিন থেকে চার কেজি। যার বাজার মূল্য ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ফলে মাশরুম চাষ অত্যন্ত লাভজনক।
সি এ ডি সি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর উত্তম কুমার লাহা জানান, মাশরুম চাষ বেকার যুবক-যুবতী ও গৃহবধূদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে তাদের বিকল্প কাজের দিশা দেখাতে পারবে। মাশরুম চাষের মধ্য দিয়ে একজন বেকার যুবক-যুবতী মাসে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবে। এছাড়াও ঘরের গৃহবধূরাও বাড়িতে বসে না থেকে এই কাজ করলে তারাও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে। এরকম একটি গৃহবধূ বাড়ির কাজের পাশাপাশি সফলভাবে মাশরুম চাষ করে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হচ্ছেন রিংকু জানা। তিনি বলেন, মাশরুম চাষ অনেকটাই সহজ। বছরের সারা সময় মাশরুম চাষ হলেও শীতের সময় সব থেকে বেশি চাষ করা হয়। মাশরুম চাষের পরিশ্রম ও খরচ কম তাই এটি লাভজনক।