Adenovirus Infection : গরমে ভাইরাসের ক্ষমতা কমায় আশায় স্বাস্থ্যমহল – is adenovirus infection decreases in summer health department said this


এই সময়: গত কয়েক দিনের মতো শুক্রবারও শ্বাসকষ্টে শিশুমৃত্যু ঘটেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিসি রায় শিশু হাসপাতালে মারা গিয়েছে বারাসত, মধ্যমগ্রাম, মসলন্দপুর ও দত্তপুকুর-উত্তর ২৪ পরগনার চার শিশু। সবার বয়স দু’বছরের কম। দু’জনের বয়স একেরও নীচে এবং তারা অ্যাডিনোভাইরাসেই সংক্রমিত ছিল। নানা ভাইরাসের জেরে শ্বাসনালীর সংক্রমণে এখনও হাসপাতালে বেড খালি পাওয়া দুষ্কর।

Adenovirus Causes : জ্বর-শাসকষ্ট নিয়ে আরও ৮ শিশুর মৃত্যু, চালু হেল্পলাইন
যদিও এমন সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতেও আশার কথা শোনাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তা ও চিকিৎসকরা। তাঁরা বলছেন, গরম বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়েই কমছে অ্যাডিনো-সহ নানা ভাইরাসের দৌরাত্ম্য। ফলে সপ্তাহ দেড়-দুইয়ের মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি প্রায় নিশ্চিত। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও পরিস্থিতির উন্নতির কথা শুনিয়েছিলেন।

Adenovirus: সক্রিয় অ্যাডিনো সহ একাধিক ভাইরাস, নতুন বছরে রাজ্যে ৪৬ শিশুর মৃত্যু
রাজ্যের জারি করা প্রেস বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, ‘বর্তমান সংক্রমণটি আদতে মরসুমি অসুখই। গত দু’বছর এই সময়ে দেদার দাপিয়েছিল করোনা। এ বছর তাকে সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে অ্যাডিনোভাইরাস-সহ কিছু ভাইরাস। তবে মহামারী পরিস্থিতি আদৌ তৈরি হয়নি। বরং আশার কথা, ভাইরাসের দাপট কমে আসছে।’

Adenovirus : একজন অ্যাডিনো আক্রান্তেরও মৃত্যু হয়নি বারাসত মেডিক্যালে: হাসপাতাল সুপার
শুক্রবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও বলেন, ‘অ্যাডিনোর প্রকোপ এখনও আছে ঠিকই। তবে তাপমাত্রা বাড়ছে। আশা করি, এ বার প্রকোপ কমবে।’ একই সুর চিকিৎসকদের গলাতেও। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘দেখা যাক। আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।’ তিনি জানান, কলকাতার বড় হাসপাতালে ভিড় কমাতে ইতিমধ্যে চালু টেলি-মেডিসিন প্রকল্প ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’কে সরকার আরও মজবুত করছে।

Adenovirus : শ্বাসকষ্টের বিপদ আরও বাড়াচ্ছে কো-মর্বিডিটি
এর ফলে দূরবর্তী হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর অসুস্থ রোগীকে বড় হাসপাতালে রেফার না করে বড় হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের থেকে ভার্চুয়াল পরামর্শ নেবেন অপেক্ষাকৃত ছোট হাসপাতালের চিকিৎসকরা। শিশুদের চলতি অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনের (এআরআই) চিকিৎসায় টেলি-মেডিসিন পরিষেবা উন্নততর হলে লাভবান হবেন রাজ্যবাসীই।

Adenovirus Infection : আরও দুই শিশুর মৃত্যু, চিন্তা বাড়ছে অ্যডিনোয়
স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, হাসপাতালের ইন্ডোর ওয়ার্ড হয়তো এখনও শিশুরোগীতে ভর্তি। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আউটডোরে জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুরোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমছে। এই প্রবণতার প্রতিফলন ইন্ডোর এবং আইসিইউতে পড়তে অবশ্য সপ্তাহখানেক লাগবে। স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, শ্বাসকষ্টের রোগী ধীরে ধীরে কমতে বাধ্য পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে।

Adenovirus Symptoms : বাঁকুড়ায় বাড়ছে অ্যাডিনো আক্রান্তের সংখ্যা, কী পদক্ষেপ স্বাস্থ্য দফতরের?
কলকাতা ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শ্বাসনালীর সংক্রমণে ভোগা শিশুরোগীর ভিড় ক্রমেই কমছে আউটডোরে। বাইপাস লাগোয়া মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সৌমেন মেউর বলেন, ‘শ্বাসনালীর সংক্রমণে ভোগা রোগী একেবারে নেই, তা নয়। তবে অ্যাডিনো তো বটেই, অন্যান্য ভাইরাল রোগভোগও কমছে।

Adenovirus : মেদিনীপুরে হাসপাতালগুলিতে বাড়ছে অ্যাডিনোয় আক্রান্তের সংখ্যা, উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতর
তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল রেখে এটা প্রত্যাশিতই ছিল।’ পঞ্চসায়রের একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিইও সুদীপ্ত মিত্র জানান, ১০ দিন আগেও শ্বাসনালীর সংক্রমণ নিয়ে ১২০ জন (৪৩টি শিশু-সহ) ভর্তি ছিল তাঁদের হাসপাতালে। এখন সংখ্যাটা কমে ৪৬ (১৩টি শিশু) হয়েছে। তাঁর অনুমান, ‘মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে আর তেমন এআরআই রোগী মিলবে না।’

Madhyamik 2023 : ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, হাসপাতালেই পরীক্ষার ব্যবস্থা
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দোলুইয়ের বক্তব্য, আউটডোরে জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টের রোগী এখনও আসছে ঠিকই। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় কম। আগামী কয়েক সপ্তাহে সেটা আরও কমবে। এই সব ক’টা ভাইরাসই বাড়াবাড়ি করে ঋতু বদল এবং আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে। তাই ঠিকঠাক গরম পড়ে গেলে, মানে আবহাওয়া স্থিতিশীল হলে, এই সব ভাইরাসের দৌরাত্ম্যও কমে।

Adenovirus Advisory : চালু ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন-স্পেশাল ওয়ার্ড, শিশুমৃত্যু নিয়ে তৎপর স্বাস্থ্য ভবন
তা ছাড়া গরমে দূষণ কমে এবং বদ্ধ ঘরে থাকার প্রবণতা কমে বলে ভাইরাসও গুটিয়ে যায়।’ তবে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শান্তনু রায়ের সতর্কবার্তা , ‘মনে রাখা দরকার, গরমে শ্বাসনালীর সংক্রমণে দায়ী ফ্লু, রাইনো, আরএসভি ভাইরাসের যতটা দাপট কমে, অ্যাডিনোর ততটা কমে না। তাই সাবধান থাকতেই হবে। বিশেষত দু’বছরের কম বয়সীদের।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *