জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শুভ শক্তির উপর অশুভ শক্তির জয়– এই হল দোল বা হোলি উৎসবের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা। ফলে, এর সঙ্গে পবিত্রতার একটা সংযোগ থাকেই। তার সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে কিছু করা বা না-করার বিষয়টি। এদিন যেহেতু পবিত্রতার সঙ্গে এই উপলক্ষটি পালন করা হয়, তাই এর সঙ্গে কিছু কিছু নিয়ম জড়িয়ে গিয়েছে। শীতের পরে আসে বসন্ত। বসন্তে আসে রঙ-উৎসব। এই সময়ে প্রকৃতিতে আসে নতুন প্রাণের তরঙ্গ। গাছে গাছে ফুল, ডালে ডালে পাতা। নীল আকাশে ওঠে উজ্জ্বল রোদ।
এটি মোটামুটি দুতিনদিনের একটি উদযাপন। প্রথম পর্বে হোলিকা দহন, পরের দিন দোলযাত্রা। হোলিকা দহন সাধারণত দোলের আগের দিনে হয়। এবার হোলিকা দহন ৬ মার্চ বিকেলে। হোলিকা দহন বা ছোটি হোলি হল পুরনো বা অশুভের উপর নতুন বা শুভের জয়। এদিন অনেকেই তাদের বাড়ির পুরনো জিনিসপত্র সব আগুনে দেন। শীতের জড়তা কাটিয়ে প্রাণের উজ্জীবনের লগ্ন এই হোলিকা।
আরও পড়ুন: রঙে ডুবে যায় গোটা দেশ, কিন্তু কোন জায়গার উৎসব অতি বিশিষ্ট? জেনে নিন সেই রংদারির খোঁজ…
কী করবেন:
১) হোলিকা দহনের দিনে ঘরে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালুন
২) ঘুঁটে, তেল, তিল, চিনি, শস্যদানা, নারকোল ইত্যাদি আগুনে অর্পণ করুন
৩) আগুনকে যখন পরিক্রমা করবেন তখন তাতে জলসিঞ্চন করুন
৪) হোলিকাদহন শেষে ওই অগ্নিকুণ্ড থেকে ছাই সংগ্রহ করুন
কী করবেন না:
১) এদিন বাইরের কারও দেওয়া খাবার খাবেন না
২) আপনি এদিন কাউকে টাকাকড়ি বা কোনও দামি জিনিসপত্র ধার দেবেন না
৩) মেয়েরা এদিন চুলে অবশ্যই তেল দেবেন, চুল বেঁধে রাখবেন, কোনও ভাবেই খুলে রাখবেন না
৪) হলুদ বা কালো রঙের পোশাক পরা এড়িয়ে যান
৫) হোলিকা দহনের দিনে রাস্তায় ইতস্তত পড়ে থাকা কোনও জিনিসে হাত দেবেন না
হোলিকা দহনের পরের দিন দোল। এবছর দোলযাত্রা বা দোলপূর্ণিমার তিথি পড়ছে ৭ মার্চ (বাংলা ক্যালেন্ডারে ২২ ফাল্গুন) মঙ্গলবারে। তবে পূর্ণিমা পড়ে যাচ্ছে আগের দিনেই, অর্থাৎ , ৬ মার্চ। দোল খুব বেশি করে বাংলার। হোলি সর্বভারতীয়। হোলি সাধারণত দোলের পরের দিন পালিত হয়। সেই হিসেবে এবছর হোলি পড়ছে ৮ মার্চ, বুধবার (বাংলায় ২৩ ফাল্গুন)।
বসন্তের আনন্দ-যাপনকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় দোলযাত্রা বা হোলি বা এই বসন্তোৎসব। রঙে রঙে রংমশাল জ্বালার লগ্ন এই বাসন্তিক উৎসব। এই লগ্ন প্রেমেরও। এ সময়ে শীতের শুষ্কতা কেটে গিয়ে প্রাণে আসে প্রেমের লাবণ্যজোয়ার। প্রেমে-গন্ধে-ছন্দে-গানে-কাব্যে প্রাণে প্রাণে রচিত হয় নবজীবনের নতুন স্তোত্রমালা।