Adenovirus News : বড়রা সাবধান নয় বলেই সংক্রমণের কবলে শিশুরা – adenovirus children get infected because adults are not careful said doctors


এই সময়: বাড়িতে শিশু থাকলে বড়দের সতর্ক হওয়া অনেক বেশি জরুরি। অথচ, বড়রা সেই সাবধানতার ধার ধারছে না বলেই শীতের গোড়ায় শুরু হওয়া অ্যাডিনোভাইরাস-সহ নানা ভাইরাল সংক্রমণে ২ বছরের কমবয়সি শিশুরা এখনও লাগাতার অসুস্থ হয়েই চলেছে বলে চিকিৎসকদের অভিমত। জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টে ভুগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা তাদেরই সবচেয়ে বেশি।

Adenovirus : শ্বাসকষ্টের বিপদ আরও বাড়াচ্ছে কো-মর্বিডিটি
অথচ, তারা সংক্রমণ নিজেরা আমদানি করছে না শরীরে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের আক্ষেপ, পরিবারের বড়রাই অসাবধান হয়ে সংক্রমণটা বাড়ি বয়ে নিয়ে আসছেন। ফলে শিশুমৃত্যুর ধারাও অব্যাহত। রবিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্তও যেমন ৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে বিসি রায় শিশু হাসপাতালেই মারা গিয়েছে ৫ জন। শ্বাসকষ্টে ভুগে ১ জন করে মারা গিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে।

Adenovirus Causes : জ্বর-শাসকষ্ট নিয়ে আরও ৮ শিশুর মৃত্যু, চালু হেল্পলাইন
এই পরিস্থিতিতে সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও অন্যান্য হাসপাতালের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ও ডেপুটি সুপার এবং শিশুরোগ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি শিশুদের শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা পরিষেবায় যুক্ত সব সরকারি কর্মী এবং সব জেলার মুখ্য ও উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ছুটি সোমবার অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করার আদেশনামা জারি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।

Adenovirus Infection : গরমে ভাইরাসের ক্ষমতা কমায় আশায় স্বাস্থ্যমহল
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা-বিধি মেনে চলার বছর দুয়েকের অভ্যাস এখন সব বাড়িতে প্রায় লাটে উঠেছে বলেই সংক্রমণের শৃঙ্খল সহজে ভাঙা যাচ্ছে না। অতিমারী পর্বের মতো মানুষ সতর্ক হলে, সংক্রমণের থাবা এতটা চওড়া হতো না। গত সপ্তাহেই বড়দের সাবধান হওয়ার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবারও বিধানসভার ভাষণে কোভিড-বিধি পালনের কথা উঠে আসে তাঁর কথায়।

West Bengal Government Holiday :জ্বর-শ্বাসকষ্টের বাড়বাড়ন্তে মধ্যেই ছুটি বাতিল ডাক্তারদের, ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকবে ফিভার ক্লিনিক
মমতার পরিবারে একজনের অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে বলে তিনি যে উদ্বিগ্ন, সে কথা জানিয়েই মুখ্যমন্ত্রী সকলের উদ্দেশে বলেন, ‘আবার মাস্ক পরুন। বিশেষ করে বাচ্চাদের সাবধানে রাখুন।’ তবে আতঙ্কিত না-হয়ে মানুষকে সচেতন হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘সব মৃত্যু যন্ত্রণাদায়ক। কোনও মায়ের কোল খালি হোক, চাই না।

Adenovirus : অ্যাডিনো আতঙ্কের মধ্যে ফের ৩ শিশুর মৃত্যু শহরে, বাড়ছে উদ্বেগ
তবে আতঙ্কিত হবেন না, সতর্ক থাকুন।’ তিনি জানান, যাদের কোভিড হয়েছিল, তাদের শরীরে বর্তমান ভাইরাল সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া বেশি হচ্ছে। কো-মর্বিডিটি থাকলে সংক্রমণ আরও বেয়াড়া আচরণ করছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘ভাইরাল সংক্রমণের শ্বাসকষ্টে প্রাণ হারিয়েছে মোট ১৯ জন। তার মধ্যে কো-মর্বিডিটি ছিল ১৩ জনের। আর ৬ জন অ্যাডিনো সংক্রমণের বলি হয়েছে।’

Adenovirus : কলকাতায় ফের অ্যাডিনোর থাবা, আরও ২ শিশুর মৃত্যু
চিকিৎসকদেরও বর্তমান পরিস্থিতি সামলানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রেফার করবেন না কথায় কথায়। তার বদলে টেলি-মেডিসিন ব্যবস্থার সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা চালান। শিশু খুব সঙ্কটজনক হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে বড় হাসপাতালে পাঠান।’

Mamata Banerjee on Adenovirus: বাড়িতে একজন অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত, আমি উদ্বিগ্ন: মমতা
স্বাস্থ্যকর্তাদের ব্যাখ্যা, বড় হাসপাতালে পাঠানোর আগে সেখানে বেড সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ছোট হাসপাতালকে। এবং শিশুকে কলকাতায় পাঠানোর জন্য জেলাস্তর থেকে যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়, যাতে শিশুকে বেশি ধকল সইতে না হয়, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Adenovirus Advisory : চালু ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন-স্পেশাল ওয়ার্ড, শিশুমৃত্যু নিয়ে তৎপর স্বাস্থ্য ভবন
বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে, দূর থেকে কলকাতায় আসার পর অনেক শিশুকেই বাঁচানো যাচ্ছে না। তবে মৃত্যু হচ্ছে কলকাতাতেও। আনন্দপুরের আরিয়ান খান (৮ মাস) এদিন ভোরে মারা গিয়েছে বিসি রায়ে। রিজেন্ট পার্কের একটি ১০ মাস বয়সি শিশুও রবিবার গভীর রাতে মারা গিয়েছে ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে।

Adenovirus Infection : আরও দুই শিশুর মৃত্যু, চিন্তা বাড়ছে অ্যডিনোয়
রবিবার গভীর রাতে, এদিন বেলায় এবং দুপুরে আরও তিনটি শিশু মারা গিয়েছে বিসি রায়ে। সকলেরই বয়স ১ বছরের কম। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গাইঘাটার এক শিশুর এই হাসপাতালেই মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে সোমবারই। রবিবার গভীর রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মারা গিয়েছে হুগলিরও এক শিশু।

Adenovirus : বিসি রায় হাসপাতালে ফের ২ শিশুর মৃত্যু, বাড়ছে অ্যাডিনো উদ্বেগ
চিকিৎসকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে হলে বড়দের সাবধান হতে হবে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেন, ‘একেবারে ছোটরা তো আর মাস্ক পরতে পারে না। তাই বাড়ির বড়রা যাতে সংক্রমণ বয়ে এনে তাদের দিয়ে না-দেয়, সে ব্যাপারে বড়দেরই সতর্ক হতে হবে। করোনা-বিধি পালন করলেই যথেষ্ট।’

Madhyamik 2023 : ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, হাসপাতালেই পরীক্ষার ব্যবস্থা
তবে আশার কথা শোনাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অভিষেক পোদ্দার। তিনি বলেন, ‘গরম পড়তেই গত কয়েক দিনে দেখছি, নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। আর একটু গরম পড়লেই এই ভাইরাল সংক্রমণ কমে যাবে আরও অনেকটা।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *