মাত্র কয়েকদিন আগেই সাগরদিঘির উপনির্বাচনে (Sagardighi By Election) শোচনীয় পরাজয় হয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress)। সাগরদিঘিতে ‘সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক’ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বুঝতে পেরেই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) আগে ওই সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে এবার বাঁকুড়া (Bankura) জেলায় করা হল কর্মী সম্মেলন। সেখানে ভাষণ দেন তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) অরুপ চক্রবর্তী (Arup Chakraborty)। আর প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মীদের আচরণবিধি বেঁধে দেন তিনি। কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনও রকমের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
উল্লেখ্য, পুরসভা নির্বাচনে ফল ভাল হলেও সম্প্রতি রাজ্যে আবাস ও নিয়োগ-সহ একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসায় জেলায় অস্বস্তিতে শাসক দল। যেমনভাবে হোক সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখার জন্যই যে শাসক দলের এমন নিদান, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরুপ চক্রবর্তী যখন ওই মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া (Bankura) জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র সহ অন্য নেতারাও।
তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ”সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে কোনও চোখ রাঙানি নয়। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে দলের নেতাদের। বয়স্কদের সম্মান করবে।” তিনি আরও বলেন,”রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩০ শতাংশ ভোট তৃণমূলের। আর ওই ভোটের জেরেই তিন তিন বার তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে।”
ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জানিয়েছিলেন সিপিএমের সংখ্যালঘু ভোট তাদের দরকার। সংখ্যালঘুদের প্রতি নজর রাখতে হবে। যদিও এই কর্মী সন্মেলন শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মীদের নিয়েই কেন, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দোলের অন্দরে, তথা রাজনৈতিক মহলেও।
এদিকে, ওন্দার BJP বিধায়ক অমরনাথ শাখা এই ইস্যুতে শাসক দলকে এক হাত নিয়েছেন। তৃণমূলকে রীতিমতো কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ”সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে সব থেকে বেশী কেউ যদি হেনস্থা করেন তাহলে তা অরূপ চক্রবর্তীর মতন কিছু লোক ও তাদের নেত্রী। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ওঁরা দুধেল গাই বলছেন। ওই সম্প্রদায়ের মানুষ আর ওঁদের সঙ্গে নেই তা সাগরদিঘির মানুষ ‘গালে থাপ্পড়’ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূল প্রথম থেকে সংখ্যালঘু মানুষদের তোষণ করে তাঁদের ভোট ব্যাঙ্ক বানিয়ে রেখেছে। আর তাঁদের ভুল বুঝিয়ে তাঁদের দিয়ে অনৈতিক কাজকর্ম করিয়ে তাঁদের বদনাম করাচ্ছে। একথা ধীরে ধীরে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষরা উপলব্ধি করছেন।”