গোপাল দলপতির ‘প্রাক্তন স্ত্রী’ অভিনেত্রী তথা মডেল হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়কে ‘রহস্যময়ী’ নারী বলে কুন্তল বর্ণনা করলেও, যাঁর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের হয়েছিল, সেই সোমা চক্রবর্তী সম্পর্কে কিছু বলেননি। এমনকী আদালতে তাঁকে সোমার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব ছিল, সোমা চক্রবর্তী বলে কাউকে চেনেন না তিনি। যদিও সোমার সঙ্গে কুন্তলের ৫০ লক্ষ টাকার লেনদেনের বিষয়টি ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে।
সোমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, কুন্তল তাঁকে ঋণ হিসেবে টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু কেন কুন্তল তাঁকে টাকা দিতে গেলেন, সে বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি সোমা। ২০১৫ সালে সোমার সঙ্গে কুন্তলের পরিচয় হয়েছিল কলকাতার একটি অভিজাত ক্লাবে। এর পর বন্ধুত্ব হয়। সোমার দাবি, সেই বন্ধুত্বের খাতিরেই তাঁকে টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল।
তবে কুন্তলের পাঠানো টাকা কেন সোমার মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছিল, সে বিষয়ে ফের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে চলেছেন তিনি। দু’টি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে কুন্তল ঘোষের সাড়ে ৬ কোটি টাকার সন্ধান পায় ইডি। ওই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে বেশ কয়েকজনের কাছে টাকা পাঠিয়েছিলেন কুন্তল। সেই তালিকায় রয়েছেন সোমাও।
কলকাতা ছাড়াও গত কয়েক বছরে সল্টলেক এবং নিউ টাউনে তাঁর পার্লার হয়েছে। কী ভাবে তিনি ওই পার্লারের ব্যবসা শুরু করলেন, তাঁর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে সোমাকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারেরা। ইডি সূত্রের খবর, কুন্তলের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে সাড়ে ৬ কোটি ছাড়াও বিএড-ডিএলএড কলেজের মালিক ধৃত তাপস মণ্ডলের ১৯ কোটি টাকার হিসেব পাওয়া গিয়েছে।
অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত সাড়ে ২৫ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। কিন্তু বাকি টাকা কোথায় গেল? কারও মাধ্যমে সেই টাকা পাচার হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কুন্তলকে জেরা করে বিশেষ কিছু পাওয়া যায়নি। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, সোমা চক্রবর্তীদের মতোই কয়েকজনের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা অন্যত্র সরিয়েছেন কুন্তল।