Adenovirus Latest News : কমছে দৈনিক মৃত্যু, ভাটার ইঙ্গিত শ্বাসনালীর সংক্রমণে – adenovirus affected daily death is increasing


এই সময়: মঙ্গল ও বুধবার মিলিয়ে শ্বাসকষ্ট প্রাণ কাড়ল আরও পাঁচ শিশুর। বিসি রায় শিশু হাসপাতালে, বর্ধমান মেডিক্যালে ও আরজি করে একজন করে এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে দু’জন মারা গিয়েছে। তাদের মধ্যে চার জনেরই বয়স ১ বছরের কম। এরই মধ্যে আশার কথা শোনাচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তর। বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিলেন, গরম বাড়তেই দাপট কমবে অ্যাডিনো-সহ অন্যান্য ভাইরাসের।

Adenovirus Infection : গরমে ভাইরাসের ক্ষমতা কমায় আশায় স্বাস্থ্যমহল
ফলে জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টের রোগী কমবে। স্বাস্থ্যকর্তারা এখন জানাচ্ছেন, সেই পূর্বাভাস অনেকাংশে ফলে যেতে দেখা যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহে দৈনিক রোগীভর্তির হার এবং আউটডোরে শিশুরোগীর সংখ্যা, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে দুটোই কমে এসেছে বেশ কিছুটা। আগের চেয়ে তুলনায় কমলেও, মৃত্যু অবশ্য চলছেই।

Adenovirus : কলকাতায় ফের অ্যাডিনোর থাবা, আরও ২ শিশুর মৃত্যু
মঙ্গলবার সকালে বাগদার এক মাস ছয়েকের শিশু জ্বর-শ্বাসকষ্টে মারা যায় আরজি কর হাসপাতালে। গত রবিবারও সেখানে দুই শিশু মারা যায় একই উপসর্গে। সে কথা জানা গিয়েছে এদিনই। মঙ্গলবারই সন্ধ্যায় শেখ তামিম (৬ মাস) নামে উলুবেড়িয়ার এক শিশুর মৃত্যু হয় মেডিক্যালে। জ্বর ও শ্বাসকষ্টের শিকার অ্যাডিনো-পজিটিভ ওই শিশুকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভর্তি করানো হয়েছিল।

Adenovirus : শ্বাসকষ্টের বিপদ আরও বাড়াচ্ছে কো-মর্বিডিটি
বুধবার ভোরে মেডিক্যালেই সঞ্চিতা বারিক (৬ মাস) নামে মগরার এক শিশু মাল্টি-অর্গ্যান ফেলিয়োরে মারা যায়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে তাকে রেফার করা হয়েছিল মেডিক্যালে। মঙ্গলবার গভীর রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে মারা যায় কালনা (১)-এর নতুনগ্রামের নুসরত খাতুন (৮ বছর)।

Adenovirus News : বড়রা সাবধান নয় বলেই সংক্রমণের কবলে শিশুরা
সোমবার থেকে গুরুতর অসুস্থ ওই বালিকাকে তীব্র শ্বাসকষ্টের জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় বর্ধমানে। বুধবার সম্রাট বারিক (১০ মাস) নামে বনগাঁরও একটি শিশু মারা যায় বিসি রায় হাসপাতালে। তাকে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সোমবার ভর্তি করা হয়েছিল। মূলত এই দু’টি হাসপাতালেই শ্বাসনালীর সংক্রমণ বা অ্যাকিউট রেসপরিটরি ইনফেকশন (এআরআই) নিয়ে আসা শিশুরোগী ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে, এদিন ওই দু’টি হাসপাতালের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আসে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন।

Adenovirus : বিসি রায় হাসপাতালে ফের ২ শিশুর মৃত্যু, বাড়ছে অ্যাডিনো উদ্বেগ
প্রথমে বিসি রায় ও পরে মেডিক্যাল পরিদর্শন করেন কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় এবং উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। দু’টি হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিষেবা দেখে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করলেও মেডিক্যালের অবস্থা তাঁদের কাছে তুলনায় বেশি ভালো বলে মনে হয়। বিসি রায়ে শিশুরোগীর চাপও বুঝতে পারেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। এদিন আচমকা বিসি রায় হাসপাতালে পরিদর্শনে যান রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। বৈঠক করেন অধ্যক্ষ ও নার্সিং সুপারের সঙ্গে।

Mamata Banerjee on Adenovirus: বাড়িতে একজন অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত, আমি উদ্বিগ্ন: মমতা
এদিকে সরকারি-বেসরকারি সিংহভাগ হাসপাতালই জানাচ্ছে, এআরআই-এর শিকার শিশুরোগীর সংখ্যা ইন্ডোর ও আউটডোর, দু’জায়গাতেই কমেছে গত কয়েক দিনে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘শ্বাসনালীর সংক্রমণে ভোগা শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি কমছে। দৈনিক সংখ্যাটা যে নিম্নমুখী, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।’ তাঁর আশা, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সংখ্যাটা আরও কমে যাবে।

Adenovirus : শিশুদের জ্বর-শ্বাসকষ্টে উদাসীন বহু পরিবারই
বিসি রায়ের অধ্যক্ষ দিলীপ পাল জানান, গড়ে রোজ তাঁদের হাসপাতালে এতদিন ধরে শ্বাসকষ্টের প্রায় ৭০ জন শিশু ভর্তি হলেও গত দু’-একদিন সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০-এর আশপাশে। আউটডোরেও জ্বর-সর্দির শিশুরোগী দৈনিক হাজার দেড়েক থেকে কমে হাজারখানেক হয়ে গিয়েছে সম্প্রতি। মেডিক্যালেও ছবিটা আলাদা নয়। কয়েক দিন আগেও সেখানে রোজ ১৫-২০ জন শিশুরোগী ভর্তি হচ্ছিল শ্বাসকষ্ট নিয়ে। এখন সেই সংখ্যাটাই দিনে ৬-৮ জনে নেমে এসেছে।

Kolkata News: জ্বর-শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে বিসি রায় হাসপাতালে ভর্তি ২ শিশুর মৃত্যু
চিত্তরঞ্জন শিশুসদনে দিন দশেক আগে দৈনিক এআরআই কেসে ভর্তির সংখ্যা ছিল ১৬-১৭টি। গত দু’-তিন দিনে সেটিই কমে দাঁড়িয়েছে ৭-৮ জনে। শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও একই রকম নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহ দেড়েকের মধ্যে ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে অন্তত ১০% কমে গিয়েছে রোগীর সংখ্যা। পিয়ারলেস হাসপাতালের সিইও সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘দিন পনেরো আগে এআরআই নিয়ে ভর্তি শিশুর সংখ্যা যা ছিল, এখন তার এক-তৃতীয়াংশ শিশু ভর্তি হচ্ছে। দৈনিক সংখ্যাটা ৭-১০ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২-৩ জনে।’

Mamata Banerjee : ‘সেরকম কোনও ঘটনা নয়’, রাজ্যের অ্যাডিনো পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর
আনন্দপুর ফর্টিস হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের আউটডোরে জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টের শিশুরোগীর সংখ্যা গত এক সপ্তাহে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগেও রোজ ১০টি শিশু আসত এআরআই-এর উপসর্গ নিয়ে। এখন আসে বড়জোর ৫ জন। মেডিকার শিশুরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক নিকোলা ফ্লিন জানান, গত কয়েক দিনে রোগী ভর্তির সংখ্যা সেখানেও কিছুটা কমেছে। আউটডোরেও তা-ই। তবে যারা গুরুতর অসুস্থ হচ্ছে, তাদের অসুস্থতার মাত্রা কিন্তু আগের চেয়ে বেশি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *