কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ইতিহাস…
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি BJP-র দখলে যায়। ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টি পায় বিজেপি। যদিও ফলাফল নিয়ে অভিযোগ তুলে ধুন্ধুমার বেধেছিল ২০১৮ সালের ১৭ মে। ফল গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে বিজেপি। পরে পঞ্চায়েত জিতেও তা গঠন করতে না পারায় দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠনের আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে গিয়েছে বিজেপি। হাইকোর্ট সমিতি গঠনের ব্যাপারে নির্দেশও দিয়েছিল। তবু বোর্ড গঠন হয়নি। কেশিয়াড়ি জেলাতো বটেই রাজ্যেরও একমাত্র পঞ্চায়েত যেখানে ৫ বছরেও বোর্ড করা যায়নি।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের দাবি
জেলা প্রশাসনের দাবি তাদের দিক থেকে সব চেষ্টাই করা হয়েছে। সেই সময় বার বার জেলাশাসক পি মোহন গান্ধী নানান ভাবে চেষ্টা করেছিল বোর্ড গঠনের। কিন্তু, লাভ হয়নি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা মানছেন, ‘সব পক্ষেরই সদিচ্ছার অভাব ছিল। যতবারই ‘অথরিটি’ হিসেবে SDO সদস্যদের চিঠি পাঠিয়েছেন ততবার পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে। ফলে প্রশাসনকে সেই দাবিতে মান্যতা দিয়ে বোর্ড গঠন থেকে বিরতই থাকতে হয়েছে।’ জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ্ত সাঁতরা ‘এই সময় ডিজিটাল’-কে বলেন, ‘ চেষ্টা হয়েছে বহুবার, নানান কারণে কেশিয়াড়িতে বোর্ড গঠন করা সম্ভব হয়নি। এর বেশি কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা সম্ভব নয়।’
কী বলছে পুলিশ?
খড়গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় ‘এই সময় ডিজিটাল’-কে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী এরকম ক্ষেত্রে রিপোর্ট আমাদের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়, তাই করা হয়েছে। এটা কখনই একমাত্র একটা ফ্যাক্টর হতে পারে না। আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ শেয়ার করি মাত্র। সবাই মিলেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।’
কী বলছে শাসক-বিরোধী দলগুলি
কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে বার বার দলবদলের ঘটনা ঘটেছে। কখনও তৃণমূলের একাধিক সদস্য বিজেপিতে গিয়েছেন। কখনও বিজেপি সদস্যেরা গিয়েছেন তৃণমূলে। এখন পাল্লা ভারী তৃণমূলেরই। খুব সহজে বলে, সমিতিতে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে জেলাজুড়ে কান পাতলেই শোনা যায়, গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব জর্জরিত কেশিয়াড়ি। শাসকদলই চায়নি সেখানে আর বোর্ড গঠন হোক। জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি এই সময় ডিজিটালকে বলেন, ‘গোষ্ঠী কোন্দল কোনও বিষয় নয়, বিষয়টি এখনও হাইকোর্টে বিচারাধীন।’ জেলা বিজেপির সহ সভাপতি অরূপ দাস বলেন, ‘বিজেপি এই বোর্ড গঠন করেছিল। কিন্তু, তৃণমূল একটা বোর্ড গঠন করিয়ে মানুষকে পরিষেবা পেতেও সাহায্য করেনি। ইচ্ছে করে বোর্ড গঠন হয়নি। আগামী পঞ্চায়েতে এর জবাব মানুষকে দিতে হবে।’
স্থানীয়রা কী বলছেন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মানুষেরই অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতি না থাকায় উন্নয়নের একাধিক কাজে সমস্যা হয়। সমস্যায় পড়তে হয় নানান ছোটখাটো কাজ নিয়েও। যদিও ব্লকের এক কর্তার দাবি, বিডিও অফিসের মাধ্যমে সব কাজই সেখানে হয়ে আসছে।