স্থানীয় সূত্রে খবর, গতকাল রাত থেকেই আলুর চুক্তিপত্র নেওয়ার জন্য জলপাইগুড়ি মোহিতনগরের হিমঘরে ভিড় করেন কৃষকরা। সকাল বেলায় হিমঘরের গেট খুলতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। গেটের সামনেই বেধে যায় ধুন্ধুমার কাণ্ড। কে কার আগে আলুর চুক্তিপত্রনেবেন এই ভেবে জলপাইগুড়ির মোহিত নগরের হিমঘরের ভেতরে ঢুকতে গেলেই বিপত্তি ঘটে। পদপৃষ্ঠ হয়ে যান বেশ কিছু কৃষক। একে ওপরের ঘাড়ের উপর পড়ে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। একাধিক কৃষক পড়ে গিয়ে আহত হন।
জানা গিয়েছে, ভিড়ের চাপে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন দু’জন মহিলা-সহ মোট ১৩ জন কৃষক। তাঁদের উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আহতদের চিকিৎসা করা হয়েছেন, বেশিরভাগ জনই সুস্থ আছেন। হিমঘরের সামনে তুমুল উত্তেজনার খবর যায় থানায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতোর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ হাজির হয় ঘটনাস্থলে। পরে হিমঘরের সামনে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে চুক্তিপত্র দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
আলু চাষিরা অভিযোগ করেছেন, চলতি বছর বাজারে আলুর দাম খুব কম। এমত অবস্থায় আলু বিক্রি করলে চাষের খরচ উঠবে না বেশিরভাগ চাষিদের। তাই বেশিরভাগ চাষি চাইছেন হিমঘরে আলু মজুত রাখতে। তবে জেলার বিভিন্ন হিমঘর থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চুক্তিপত্রছাড়া হচ্ছে আলু চাষিদের জন্য। সে কারণেই আগে কে চুক্তিপত্রপাবে, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি লেগে যায় চাষিদের মধ্যে।
জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, “সমস্ত কোল্ড স্টোরেজগুলিতেই বিশাল লাইন পড়ছে। আমাদের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে লাইন বজায় রেখে চুক্তিপত্রবন্টন ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চালানোর। মোহিতনগরে অত্যাধিক ভিড়ের কারণে ঘটনাটি ঘটে। কিছুজন আহত হন। আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসি।” তবে কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন চাষিদের একাংশ। এমনকি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিমঘরগুলিতে যাতে আরও চুক্তিপত্রপাওয়ানোর কোনও ব্যবস্থা করা হয়, সে ব্যাপারেও আর্জি জানানো হয়েছে।
