দেবারতি ঘোষ ও প্রসেনজিত্ সরদার: আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ মোল্লার মুক্তির পর দলের কর্মী-সমর্থকদের যে উল্লাস তা নজরে পড়েছে গোটা রাজ্যের। এর পরই সংগঠনক চাঙ্গা রাখতে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লাকে ভাঙড়ের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিল তৃণমূল কংগ্রেস। আরাবুল ইসলাম ও শওকত মোল্লাকে নিয়ে বৈঠকের পর ওই ঘোষণা করা হয় দলের তরফে।
আরও পড়ুন-বিদ্যুত্ দফতরের কর্মী শান্তনুর বিশাল সাম্রাজ্যের হদিস, ২ দিনের ইডি হেফাজত তৃণমূল নেতার
ভাঙড়ের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে শওকত মোল্লা বলেন, ভাঙড়ে দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কাল ফুলফুরা শরিফ যাব। ওখানে গিয়ে জিয়ারত করে পরশু দিন থেকে ভাঙড়ে পা রাখব। কিছু মানুষ আছে যারা ধর্মের কালোবাজারি করে মানুষকে ভাগ করে। ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রশ্ন আমরা মানুষকে একত্র করতে চাই।
শওকতকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, কে দায়িত্ব পাচ্ছে আর কে পাচ্ছে না তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা ভাঙড়ের মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। এতদিন যেভাবে ভাঙড়ের মানুষকে আটকে রাখা হয়েছিল তা আমরা ভাঙতে পেরেছি। ভাঙড়ের মানুষ তাদের গন্তব্য খুঁজে নেবে। তাই কে দায়িত্ব পেল তা নিয়ে আমি ভাবি না। সৌজন্যের রাজনীতিতে আমি বিশ্বাস করি। এখানকার পরিবেশ কেউ নষ্ট করতে চাইলে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিরোধ করব।
ভাঙড়ে আইএসএফ সমর্থকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এমনটাই খবর ছিল তৃণমূলে। পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে নড়চড়ে বসে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ভাঙড়ের মাটি উদ্ধার করতে প্রস্তত হয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেইমতো কলকাতায় সুব্রত বক্সির অফিসে ডেকে পাঠানো হয় ভাঙড়ের নেতাদের। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় শওকত মোল্লা এখন থেকে পর্যবেক্ষক দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে, শওকতকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করায় বেজায় চটেছেন আরাবুল ইসলাম। এমনই খবর আরাবুল ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে। আজ বৈঠক শেষে আরাবুল ইসালম বের হলে তাঁকে বেশ গম্ভীর দেখায়। এনিয়ে তাঁকে বারবার জিজ্ঞাসা করা হয়। সাধারণভাবে সোজাসাপটা কথা বলেন আরাবুল। তবে আজ তিনি বলেন, ‘দলের নেতৃত্বে যেভাবে বলবে সেভাবেই চলতে হবে। এছাড়া তো আর কোনও উপায় নেই!’ আরাবুল ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, আরাবুলের বক্তব্য যাঁকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হল একসময় তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেই ভাঙড়ের মাটি দখল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসময় তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। একসময় শওকতের বিরুদ্ধেই মূল লড়াই ছিল ভঙড়ের।
শওকত মোল্লা ভাঙড় বিধানসভার পর্যবেক্ষক হওয়ায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা ঢাকঢোল বাজিয়ে আবির উড়িয়ে আনন্দে মাতালেন ভাঙড় থানার সামনে। সঙ্গে চলল মিষ্টি বিলি। তবে ওই আনন্দে সামিল হয়নি ভাঙরের নেতা আরাবুল ইসলাম, হাকিমুল ইসলাম-সহ কাইজার আহমেদের মতো নেতৃত্বরা।