হলদিয়া পুরসভায় মালির কাজ করার সময় গাছের শিকড় দিয়ে ঘর সাজানো বিভিন্ন জীব জন্তুর মডেল বানাতে শুরু করে কালীশংকরবাবুর । এইভাবে একটি দুটি বানাতে বানাতে বেশ কয়েকটা বানিয়ে ফেলেন।আর সেই মডেল নিয়ে একদিন হলদিয়া পুরসভার অন্তর্গত পৌর পাঠভবন স্কুলের সামনে নিয়ে হাজির হয়। তখন পড়ুয়ারা তাঁর তৈরি গাছের শিকড়ের মডেল দেখে খুব মজা পায়।
বীরাপ্পানের মতো গোঁফের কারণে খুদেরা কালীশংকর বেরাকে ডাকের বীরাপ্পান কাকু বলে। সেই থেকে এলাকার মানুষের কাছে বীরাপ্পান নামেই পরিচিত তিনি। কালিশংকরবাবুর গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি মডেল পড়ুয়াদের ভালো লাগায় পড়ুয়ারা স্কল কর্তৃপক্ষকে প্রদর্শনী আকারে তুলে ধরার আবেদন জানায়। সেই মতো পড়ুয়াদের ইচ্ছা পূরণে স্কুলে কালিশংকর গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি মডেল স্কুলে প্রদর্শনী আকারে প্রদর্শিত হয়।
২০১৭ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন গাছের শিকড় দিয়ে বানর,হরিণ,ডলফিন,সাপ, ব্যাঙ সহ প্রায় ২০০ টির মতো মডেল বানিয়ে ফেলেছেন। তবে তিনি বিক্রির জন্য তৈরি করেননি। মডেলগুলি মেলায় মেলায় প্রদর্শনী আকারে তুলে ধরাই একমাত্র লক্ষ্য। কাজের ফাঁকে জেলার বেশ কয়েকটি মেলায় তিনি মডেল গুলি প্রদর্শনী আকারে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি চাইছেন তাঁর এই কাজে সাধারণ মানুষ খুশি হচ্ছে। তবে সরকারি সাহায্য পেলে আরও বেশি মডেল তৈরি করতে পারবেন তিনি বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
শনিবার হলদিয়ার কুমারচন্দ্র জানা অডিটোরিয়ামে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী থেকে জেলার প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অভাব অভিযোগের কথা যখন শুনছিলেন আধিকারিকরা তখন কালীশংকরবাবু জানান, গাছের শিকড় দিয়ে যে মডেল বানাচ্ছে সে তার জন্য কিছু যন্ত্রপাতির প্রয়োজন। সরকারিভাবে যাতে সাহায্য করা হয় তার আবেদন জানায়। প্রশাসনিক কর্তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
কালীশংকরবাবুর কথায়, হলদিয়া পুরসভার বাগানে মালির কাজ করার পর বাড়ি যাওয়ার পথে যে সমস্ত গাছের শুকনো শিকড়, নারকেলের খোসা পড়ে থাকে সেগুলি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে একটি ধানের কাস্তের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের মডেল তৈরি করে। প্রথম প্রথম সহকর্মীরা তার এই কাজের গুরুত্ব না দিলেও পরে প্রশংসা করতে হয়।