“ফুলশয্যার আগেই সরকারি চাকরি চলে গেল!” গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতিতে জলপাইগুড়ির যুবকের চাকরি যাওয়া নিয়ে রীতিমতো ঢি ঢি পড়ে গিয়েছিল নেটপাড়ায়। “এবার বিয়েটা টিকবে তো?” তীর্যক কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় রাজডাঙা পিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লার্ক প্রণব রায়কে। “১০ বছরের প্রেম, তখন সরকারি চাকরির নামগন্ধও ছিল না”, এবার যাবতীয় কটাক্ষের জবাব দিলেন ভাইরাল হওয়া সেই প্রণব। একইসঙ্গে পরিবারকে নিয়ে ‘টানাটানি’ করার জন্য তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনদের উপর।
ওই বেতনে সংসার চলে না
প্রণব রায়
“স্কুল থেকে প্রেম করছি, এসব দেখে বউ হাসছে…”
গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ৮৪২ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরেই তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করে SSC। আর সেখানেই নাম ছিল রাজডাঙা স্কুলের প্রণব রায়ের। একইসঙ্গে তাঁর বিয়ের ছবিও ভাইরাল হয়েছিল। কালরাত্রির দিনই তাঁর চাকরি যাওয়ার খবর সামনে আসে। এরপরেই ট্রলের বন্যা বয়ে গিয়েছিল।
এই ঘটনার পর প্রথম মুখ খুললেন প্রণব রায়। তিনি বলেন, “আমাদের স্কুল জীবনের প্রেম। দশ বছরের সম্পর্ক। তখন তো আমার সরকারি চাকরি ছিল না!” নেটিজেনদের একাংশ তাঁর উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছিল-”বিয়েটা আদৌ টিকবে তো?” ‘ফেভিকলের জোড়’ হাবেভাবে এমনটাই বুঝিয়ে দিলেন প্রণব। তিনি বলেন, “এই সব মন্তব্য শুনে আমি এবং আমার স্ত্রী হাসাহাসি করছি।” কিন্তু, বিয়ের ছবি ভাইরাল করা নিয়ে নেটপাড়ার উপর ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
Hooghly News: ‘চাকরি পেতে টাকা কেন একটা মিষ্টির প্যাকেট দিইনি’, দাবি টুম্পার
প্রণবের কথায়, “চাকরি আমার গেছে। তালিকাতে আমার নাম দেখা গিয়েছে। আমার পরিবারের কারও কোনও দোষ নেই। সেক্ষেত্রে কেন আমার স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদের ছবি এভাবে ফেসবুকে ছড়ানো হবে? এটা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যা বলার আমাকে বলুন। আমার ছবি ভাইরাল করতে পারত।”
“ওই বেতনে সংসার চলে না”
গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় সরকারি চাকরি হারাতে হয়েছে তাঁকে। এই মামলা এখন ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন। কিন্তু, চাকরি যাওয়া নিয়ে বিশেষ আপশোস নেই, জানালেন প্রণব।
তিনি বলেন, “আমি কাউকে টাকা দিইনি। পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলাম। এই চাকরিটা পেয়েও আমি খুশি ছিলাম না। ২০-২৫ হাজার মাসে বেতন ছিল। কিন্তু, অসম্ভব কাজের চাপ ছিল। আর এই বেতনে সত্যি কথা বলতে সংসার চলে না। আমি অনেক চাপ নিয়ে কাজ করেছি। আমার বিকল্প নেওয়া না হলে স্কুলের কাজে সমস্যা হবে। অন্য সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দেব।”
প্রণবের সংযোজন, “আমার কোনও কোনও সময় আমার হাসি পাচ্ছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে আমার চাকরি গিয়েছে। কিন্তু, আমার বুদ্ধি-ট্যালেন্ট তো চলে যাইনি। নতুনভাবে পথ চলা শুরু করব।”