Santanu Banerjee : ‘সোনার খনি’, চমকানোর মতো নাম আছে শান্তনুর দুই আইফোনে: ইডি – ed informed that important informations found from santanu banerjee iphone


এই সময়: স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বাজেয়াপ্ত দু’টি আইফোনে এই মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে বলে সোমবার আদালতে দাবি করল ইডি। গত শুক্রবার ধৃত হুগলির তৃণমূল নেতা শান্তনুকে দু’দিনের ইডি হেফাজত শেষে এ দিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, দু’টি মোবাইলে যে তথ্য মিলেছে, তা আক্ষরিক অর্থেই ‘সোনার খনি’।

WB Recruitment Scam : আঁতাঁত ‘ত্রিমূর্তি’র, চাকরির কুশীলব কুন্তল-তাপস-শান্তনু
সেখানে এমন কিছু নাম পাওয়া গিয়েছে, যা চমকে দেওয়ার মতো। কেস ডায়েরিতে নামগুলি উল্লেখ করলেও তদন্তের স্বার্থে এ দিন তা প্রকাশ্যে আনেনি ইডি। পাশাপাশি তদন্তকারীদের দাবি, এ পর্যন্ত এই মামলায় প্রতারণার অঙ্ক ৩৫০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। শান্তনুকে এ দিন আদালতে পেশ করে ইডি-র দাবি – হিমালয়ের মতো দুর্নীতি হয়েছে শিক্ষা দপ্তরে। ৩৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।

Recruitment Scam : ম্যারথন জেরা শেষে নিয়োগ দুর্নীতিতে ED-র হাতে গ্রেফতার শান্তনু
শান্তনুর দু’টি আইফোন নিয়ে বিশেষ সিবিআই কোর্টের বিচারক বিদ্যুৎকুমার রায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ইডির কৌঁসুলি ফিরোজ এডুলজি। তিনি বলেন, ‘শান্তনু দু’টি আইফোন ব্যবহার করতেন। তা থেকে চাকরিপ্রার্থীদের প্রচুর অ্যাডমিট কার্ডের নথি মিলেছে। এটা একটা গোল্ড মাইন। যাঁদের অ্যাডমিট কার্ড ছিল, তাঁদের মধ্যে অনেকে চাকরিও পেয়েছেন। বাকি যে ৩০০ জনের লিস্ট উদ্ধার হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে কারা চাকরি পেয়েছেন, তা জানার জন্য শিক্ষা দপ্তরের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।

Santanu Banerjee : শান্তনুকে টাকা দিলে কি সরকারি দফতরে বদলিও, মিলেছে নথি, আদালতে লিখিত দাবি ইডির
ওই ফোনে যাঁদের নাম আছে, তা দেখলে চমকে যাবেন।’ এরপর মামলার অগ্রগতি জানিয়ে ইডি কেস ডায়েরি তুলে ধরে বিচারকের কাছে। ইডির কৌঁসুলির সওয়াল, ‘এত ব্যাপক আকারে দুর্নীতি হয়েছে যে হিমালয় পর্বতকেও মনে হচ্ছে যেন পুরুলিয়ার পাহাড়।’ এর আগে ইডি দাবি করেছিল, এখনও পর্যন্ত এই মামলায় নগদ, গয়না এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ফ্রিজ় করা টাকা মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত অর্থের পরিমাণ ১১১ কোটি।

Santanu Banerjee : শান্তনুর সম্পত্তির তল পেতে স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকেও তলব ইডি-র
শিক্ষা দপ্তরের দুর্নীতির সঙ্গে শান্তনু যে সরাসরি জড়িত, এ দিন ফের তা দাবি করে ইডি। গত ২০ জানুয়ারি শান্তনুর বাড়িতে আচমকা হানা দের তদন্তকারীরা। তখনই ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর অ্যাডমিড কার্ড উদ্ধার করেন তাঁরা। ইডি-র দাবি, এই ৩০০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষা দপ্তরে চাকরি পেয়েছেন বলে ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে শান্তনু বিভ্রান্ত করেছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।

Santanu Banerjee : রাজনীতিতে উল্কার গতিতে উত্থান, কী ভাবে দুর্নীতিতে জড়ালেন হুগলির শান্তনু?
তবে শান্তনুর আইনজীবী প্রতিম ভট্টাচার্য এবং রাজেন্দ্রপ্রসাদ রায়চৌধুরী বলেন, ‘মক্কেলের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। তাঁকে প্রভাবশালী বলা হচ্ছে। তিনি রাজনৈতিক নেতা হওয়ার পাশাপাশি একজন ব্যবসায়ীও।’ তাঁরা যুক্তি দিয়ে বিচারককে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ‘আমাদের মক্কেল তদন্তে প্রথম থেকেই সহযোগিতা করেছেন। ইডি-র ডাকে এর আগে ছ’বার গিয়েছেন সিজিও কমপ্লেক্সে। তখন ইডি কিছু পেল না। সপ্তম বার ডাকতেই গ্রেপ্তার কেন করতে হলো? যে কোনও শর্তে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।’

Shantanu Banerjee: ‘এই কেসের মাস্টারমাইন্ড কুন্তল অন্য রাজ্যে টাকা সরাচ্ছে…’, দায় ঝাড়ছেন শান্তনু
শান্তনুর আইনজীবীদের এই সওয়ালে বিচারক কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করে তাঁদের থামিয়ে বলেন, ‘কবে গ্রেপ্তার করা হবে, সেটা কোথাও লেখা নেই। এক দিনে গ্রেপ্তার করবে, নাকি ৫০ দিনে করবে, সেটা একেবারেই তদন্তকারী অফিসারদের বিষয়। সেটা তদন্তকারী অফিসাররা বুঝবেন। আপনারা যেটা বলবেন, সেটা পয়েন্টে বলুন। এটা পিএমএলএ অ্যাক্টে (টাকা পাচারের আইন) মামলা হচ্ছে। তা ধরেই আপনারা সওয়াল করুন।’

Santanu Banerjee : সিমকার্ডের দোকান থেকে ধাবা, রিসর্টের মালিক! শান্তনুর উত্থানে হতবাক পড়শিরা
বিচারক বলেন, ‘ইডি কী তথ্য পেয়েছে, তদন্তে কী উঠে আসছে, তা নিশ্চয়ই কেস ডায়েরিতে আছে। আরও তো অনেক লোক জড়িত থাকতে পারেন। তাঁদের তো অনেক সম্পত্তিও আছে। তাঁদের তো গ্রেপ্তার করা হয়নি। ওঁর নিশ্চয়ই কিছু পাওয়া গিয়েছে। কেস ডায়েরিতে কী আছে দেখতে হবে? তেমন তথ্য না থাকলে, ইডি-র আবেদন মানা হবে না।’ এতে সম্মতি জানিয়ে সওয়াল শেষ করেন শান্তনুর কৌঁসুলিরা। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে বিচারক শান্তনুকে ইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *