প্রথা অনুযায়ী, রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবন নবান্নে প্রবেশ করেই নিজের ঘরে চলে যান কর্ম তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের ফাইল ওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সূচি অনুযায়ী কী কাজ রয়েছে, কোথায় যাওয়ার কথা সে ব্যাপারে সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে মত্ত থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন দেখা যায় অন্যরকম চিত্র। নবান্নে পৌঁছেই এদিন তিনি সোজা চলে যান চার তলায়। চতুর্থ তলায় রয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরের কর্মীরা।
এদিন চতুর্থ তলায় পৌঁছে সরাসরি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে দেখেই হতচকিত হয়ে পড়েন কর্মীরা। সূত্রে খবর, প্রথমেই কীরকম কাজ চলছে সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেন তিনি। জানা গিয়েছে, এমন সময় তিনি লক্ষ্য করেন দফতরের কয়েকটি চেয়ার ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এটা দেখেই উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন কয়েকজন কর্মী অনুপস্থিত সে ব্যাপারেও খোঁজখবর নেন। তবে কর্মীরা জানান, “অনেকেই ছুটিতে আছেন”, সে কারণেই বেশ কিছু চেয়ার ফাঁকা।
পাশাপাশি, ডিএ নিয়ে ধর্মঘটের দিন সরকারি কর্মচারীদের উপস্থিতি কেমন ছিল, সে ব্যাপারেও খোঁজখবর নেন বলে জানা গিয়েছে। তবে নির্দিষ্ট করে এই দুই দফতরে কেন মুখ্যমন্ত্রীর ঝটিকা সফর সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। দুই দফতর নিয়ে তাঁর কাছে কাজ সম্পর্কিত কোনও অভিযোগ ছিল কিনা সে ব্যাপারেও গুঞ্জন রয়েছে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের উদ্যোগে আন্দোলন চালাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। গত ১০ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ কো-অর্ডিনেশন কমিটির ডাকে ধর্মঘটও পালন করে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ধর্মঘটের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় প্রশাসনকে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীকেও একটি অনুষ্ঠান থেকে বলতে শোনা যায়, ” আমায় পছন্দ না হলে আমার মুণ্ডু কেটে নিন, কিন্তু এর থেকে বেশি ডিএ পাবেন না।”
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ডিএ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কমবেশি সরকারি কর্মচারীদের একাংশের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন সরকারি দফতর, সরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে কলেজ, স্কুলে অতর্কিতে পরিদর্শন করতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। সেক্ষেত্রে নিজের কর্মস্থলে তাঁর নিকটস্থ কর্মচারীরা কীরকম কাজ করছেন, তা খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী এদিন যান বলে ধারণা অনেকেরই।