মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বৃহস্পতিবার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকেও হাজিরায় কড়াকড়ির নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু হাজিরা নয়, বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত যাতে কর্মীরা অফিসে থাকেন, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও বায়োমেট্রিক হাজিরা খারাপ থাকলে দ্রুত মেরামতের কথা বলা হয়েছে। আর যেখানে সইয়ের ব্যবস্থা চালু, সেখানে বিকেল পাঁচটার আগে কোনও ভাবেই খাতা দেওয়া যাবে না। ঘটনা হলো, নবান্নে প্রায় আট বছর আগে বসানো বায়োমেট্রিক মেশিন এখনও অচল।
গত বুধবার নবান্নে পা রেখে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি স্বরাষ্ট্র দপ্তরে হাজির হন কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতে। তাঁর এই দপ্তর পরিদর্শনের কথা কারও জানা ছিল না। বেলা বারোটার পরে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পুলিশ এস্ট্যাবলিশমেন্ট শাখায় গিয়ে কর্মীদের উপস্থিতি দেখে হকচকিয়ে যান তিনি। বহু কর্মী আসেননি তখনও! এতে রীতিমতো বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। পরের দিন, বৃহস্পতিবার হাজির হন অর্থ দপ্তরে। তবে সেদিন হাজিরায় সন্তুষ্ট হন। মুখ্যমন্ত্রীর এই দপ্তর পরিদর্শনের পরেই হাজিরা নিয়ে মুখ্যসচিব কিছুটা সক্রিয় হন।
নবান্ন সূত্রের খবর, প্রচুর ছুটি পাওয়ার পরেও একাধিক দপ্তরের কর্মীদের একাংশ নিয়মিত অফিসে আসেন না। সকাল এগারোটার আগে অফিসে ঢোকেন না অনেকে। কেউ কেউ তো তারও পরে আসেন। আবার বিকেল চারটের পর থেকেই বাড়ি ফেরার তাড়া শুরু হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী এই অভিযোগ বেশ কিছু দিন ধরেই পাচ্ছিলেন। শুধু নবান্নই নয়, অনেক সরকারি দপ্তরেই এই চিত্র বলে অভিযোগ আসে তাঁর কাছে। অতঃপর নিজে স্বরাষ্ট্র দপ্তরে গিয়ে তা উপলব্ধিও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। নবান্নের কর্তাদের কথায়, শুধু আন্দোলন নয়, কাজও করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক বলেন, ‘অফিসের সময়ে কাজ করতেই হবে। এ নিয়ে কিছু বলার নেই।’ রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্তচৌধুরী বলেন, ‘সরকারের কাছে প্রশ্ন, তারা কি এত দিন ঘুমোচ্ছিল? কর্মীরা অফিসে কী কাজ করছেন, অর্থাৎ ওয়ার্ক ডায়েরি যা বাম সরকার চালু করেছিল, তা-ও কার্যকর করতে হবে।’