পর্যটকদের কাছে যেমন খুশি ভাড়া আদায়, যানজট মিলিয়ে নাজেহাল পরিস্থিতি দেখা দেয়। এ বার যাতে ফের পর্যটকদের একই রকমের হেনস্থার মুখে পড়তে না-হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই নয়া ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশের ডিএসপি অরিন্দম অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘পর্যটনই দার্জিলিংয়ের অর্থনীতিকে সবল রাখার অন্যতম উপায়। অথচ পর্যটকদের হেনস্থা হলে আখেরে কার ক্ষতি, সেটা অনেকেই বুঝতে চান না। সেই কারণেই এ বার পুরো ব্যবস্থাটি আরও মসৃণ করার কাজে নামা হয়েছে।’
দার্জিলিংয়ে সাধারণত পর্যটন মরসুম শুরু হয় এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ। এ বার জি-২০ বৈঠককে কেন্দ্র করে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করবে বলে অনুমান জেলা প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলির পরীক্ষা প্রায় হয়ে যাওয়ায় হোটেল বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে।
সেই কারণে, শহর জুড়ে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে যাতে কোথাও যানজট নজরে এলেই দ্রুত পুলিশকর্মীরা গিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারেন। শহরের সর্বত্র একমুখী যান চলাচল ব্যবস্থা চালু হয়েছে। জাতীয় সড়ক দিয়ে যানবাহন শহরে ঢুকলেও জলাপাহাড় রোড দিয়ে যাতে সমস্ত গাড়ি শহরের বাইরে বার হতে পারে সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমনকী, দার্জিলিং শহরে ঢোকার মুখে বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটির কারণে রাস্তা সরু হয়ে রয়েছে। খুঁটি সরিয়ে সেই সমস্ত রাস্তাও প্রশস্ত করার কাজ শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি ট্র্যাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে গাড়ি চালকদের সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত পথে কোথাও যাত্রী নামানোর জন্য গাড়ি বেশিক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। একই সঙ্গে চালক সংগঠনগুলিকে ভাড়ার তালিকা লাগাতে বলা হয়েছে। কোথাও ভাড়া নিয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে কোনও অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
ট্র্যাফিক পুলিশের ডিএসপি বলেন, ‘দার্জিলিংয়ের রাস্তাঘাটে খুব বেশি হলে ছয় হাজার গাড়ি চলাচল করতে পারে। সেখানে পর্যটন মরশুমে অন্তত বাইশ হাজার গাড়ি চলাচল করে। তাতেই যানজটের সমস্যা হচ্ছে।’ পর্যটন ব্যবসায়ীরা অবশ্য ট্র্যাফিক পুলিশের এই উদ্যোগের পাশাপাশি পর্যটন দপ্তরের কাছে একটি টোল-ফ্রি নম্বর চালু করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘যান চলাচল স্বাভাবিক না-থাকলে পর্যটকেরা দার্জিলিংয়ে এড়িয়ে যাবেন। তাতে সকলেরই লোকসান। পর্যটন দপ্তর টোল-ফ্রি নম্বর চালু করলে পর্যটকেরা অন্তত তাঁদের সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানাতে পারবেন।’