যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে শনিবার বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে গ্রেপ্তার করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। তারপরে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরেই শুরু ‘নাটকীয়’ ঘটনা-প্রবাহের। জিতেন্দ্রর গ্রেপ্তারির খবর আগেই পৌঁছেছিল দিল্লি পুলিশের কাছে। আসানসোল কমিশনারেটের বিশেষ দলকে দিল্লি পুলিশ জানায়, তাদের অনুমতি ছাড়া এ ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা অবৈধ।
এ আদতে ‘অপহরণের সামিল’ বলেও জানায় তারা। যার পাল্টা আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার অভিযোগ, দিল্লি পুলিশই তাঁদের সঙ্গে অপহরণকারীর মতো আচরণ করেছে। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হওয়ায় এক সময়ে দু’পক্ষের তর্কাতর্কি, বচসা শুরু হয়ে যায়।
আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ যাবতীয় কাগজপত্র দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করে, তারা যা করছে, তা আদালতের নির্দেশে ও আইন মেনে। এরই মধ্যে খবর পৌঁছয় কমিশনারেটের পুলিশকর্তাদের কাছে। তাঁরা দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপরে অবশ্য আর সমস্যা হয়নি। জিতেন্দ্রকে নিয়ে শেষে বাংলায় পৌঁছয় আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেট।
দিন কয়েক আগে দিল্লি থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পাঞ্জাব পুলিশ। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময়ে রীতিমতো আইনি লড়াই শুরু হয় হরিয়ানা, দিল্লি ও পাঞ্জাব পুলিশের মধ্যে। তা নিয়ে বেশ শোরগোল পড়েছিল। আর শনিবার আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়েই জিতেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করে। তাতেও গোলমাল এড়ানো যায়নি।
জানা গিয়েছে, প্রথমে আসানসোল থেকে তদন্তকারীদের একটি দল দিন সাতেক আগে দিল্লি যায়। গত শুক্রবার আরও একটি দল পৌঁছয় রাজধানীতে। এ দিকে, কলকাতা হাইকোর্টে রক্ষাকবচের আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ায় দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন জিতেন্দ্র। সবদিক মাথায় রেখে পুলিশ তাঁর ফোন ট্র্যাক করছিল। পাশাপাশি সূত্র মারফত নিয়মিত খবর রাখছিল জিতেন্দ্রর গতিবিধির। শনিবার যেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, নয়ডার কাছে সেই যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের আশপাশে তিন দিন ধরে ছিল আসানসোল পুলিশের বিশেষ দল।
কম্বল বিতরণে পদপিষ্ট হয়ে মৃত তিন জনের মধ্যে ছিলেন ঝালি বাউড়ির ছেলে সুখেন বাউড়ি। গত ১৫ ডিসেম্বর জিতেন্দ্র ও তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। স্বামী আর ফিরবেন না। তবে জিতেন্দ্র গ্রেপ্তারিতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন সুখেনের স্ত্রী পূর্ণিমা। তিনি বলেন, ‘এই গ্রেপ্তারিতে আমরা সামান্য হলেও সন্তুষ্ট। কিন্তু আমরা শাস্তি চাই।’