পিয়ালি মিত্র: ফর্ম না ভরেও চাকরি!শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি জানা গিয়েছিল অনেকে সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পান। এবার পুরসভাগুলোর নিয়োগ নিয়ে উঠে এসেছে আরও বিস্ফোরক তথ্য। পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ দেওয়া তো দূর, অনেকে চাকরির আবেদনপত্রটুকুও পূরণ না করেই পুরসভার চাকরি পেয়ে গিয়েছে।
কীভাবে? ইডি সূত্রের দাবি, পুরসভারগুলোর তরফে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দায়িত্বে ছিল অয়ন শীলের সংস্থা। নিয়োগের জন্য আবেদন সংক্রান্ত ফর্ম তৈরি থেকে প্রশ্নপত্র তৈরি, ওএমআর শিট তৈরি সবটাই করত অয়নের সংস্থা। ফলে টাকার বিনিময়ে এজেন্ট, কিছু পুরকর্মী বা আধিকারিকের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা হাতে পাওয়ার পর সেই তালিকা ধরে অয়নের সংস্থা-ই সেই সব চাকরিপ্রার্থীদের অনেকের হয়ে ফর্ম পূরণ করা থেকে উত্তরপত্র তৈরি সবটাই করে দিতেন। এজেন্ট ছাড়া অয়ন নিজেও সরাসরি টাকা নিয়ে এই চাকরির ব্যবস্থা করতেন।
উল্লেখ্য, তাঁর বাড়ি থেকে শুধুমাত্র এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড-ওএমআর শিটই নয়, উদ্ধার হয়েছে পুরসভা-সহ অন্যান্য বহু দফতরের নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও। সল্টলেকে অয়ন শীলের অফিসে তল্লাশি চালিয়েও পাওয়া গিয়েছে পুরসভায় নিয়োগের ৭০টি নথি। উদ্ধার হয়েছে দমকলে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি। প্রভাবশালীদের নির্দেশেই ওইসব কাজ করেছেন অয়ন। এমনটাই মনে করছে ইডি। প্রভাবশালী যোগেই পুরসভায় বিভিন্ন কাজ পেত অয়ন। অয়ন ও তাঁর স্ত্রীর কোম্পানি ২০১৮-১৯ সালের পুরসভায় নিয়োগ পরীক্ষায় বরাত পায়।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এবার ইডির নজরে অয়ন শীলের বান্ধবী এক রহস্যময় নারীও! তদন্তে উঠে এসেছে, অয়ন শীলের অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ওই মহিলার অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। আর সেখানেই উঠেছে প্রশ্ন। কী কারণে ওই টাকা ওই মহিলার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল? তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
পেশায় অয়ন শীল একজন প্রোমোটার। অন্তত ৪০ জায়গায় প্রোমোটিং করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে, সেই টাকা তিনি পেলেন কোথা থেকে? পাশাপাশি, একজন প্রোমোটারের অফিসে কেন নিয়োগ সংক্রান্ত নথি থাকবে? প্রশ্ন সেখানেও। টানা ৩৭ ঘণ্টা তাঁর সল্টলেকের অফিসে ম্যারাথন তল্লাশি চালানোর পরে রবিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূল নেতা শান্তনুর লিঙ্কম্যান অয়ন শীলকে।
আরও পড়ুন, ১০ কোটিতে জমি! মণীশের সম্পত্তির দলিল ঘাঁটতেই গরুপাচার কাণ্ডে ইডির নজরে আরও ২ তৃণমূল নেতা
