চম্পক দত্ত: নিজের স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগে রাশ টানা হয়েছে ইতিমধ্যেই। ক্লাস নেওয়া তো দূরের কথা এমনকি উচ্চ মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রেও চাপানো হয়েছে একাধিক নিষেধাজ্ঞা। এমনকি নিয়মিত স্কুলে এলেও হাজিরা খাতায় সই পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, গত ১০ মার্চ সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ নিয়োগ, প্রাপ্য ডিএ সহ একাধিক ইস্যুতে ধর্মঘটের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জেরে স্কুল কর্তৃপক্ষের রোশের মুখে পড়ে টানা ১০দিন ধরে কার্যত এক ঘরে হতে হয়েছে দাসপুর থানার এক স্কুল শিক্ষককে।
ডিএ’র দাবিতে ধর্মঘটে সামিল হওয়ার জেরে এমনই স্কুলের রোশের মুখে কার্যত একঘরে এক শিক্ষক। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার বরুণা সৎসঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে।
অভিযোগের তীর প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির দিকে। দীর্ঘদিন ধরেই নিজগৃহে পরবাসী হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বরুণা সৎসঙ্গ উচ্চ বিদ্যালয়ের দর্শণ বিভাগের শিক্ষক অষ্টম বেরা। শিক্ষকের বক্তব্য, তার প্রতি এই দুর্ব্যবহারের বিষয়ে শিক্ষা বিভাগের এডিআই এর কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনিও লিখিত অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। ইমেলের মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালেও সেখান থেকেও কোনোও রকম সাড়া মেলেনি। এর জেরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই শিক্ষক।
আরও পড়ুন: Bengal Weather Update: বুধবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি দক্ষিণে, পার্বত্য এলাকায় চলবে বৃষ্টি
অন্যদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত ব্যানার্জির দাবি, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই শিক্ষক ধর্মঘটের দিন কেন উপস্থিত ছিলেন না সেটা জানার জন্য ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি আগে থেকে কোনও নোটিশও দেননি। তাই ধর্মঘটের পরের দিন ওই শিক্ষক কাজে যোগ দিতে এলে স্কুলের তরফে জানানো হয় প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলতে। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাবে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে তাকে হুমকি দেওয়ান। তাই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুকুমার বেরার নির্দেশে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বিদ্যালয়ের সমস্ত কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্কুলে নেই শিক্ষক, ফাঁকা ক্লাসরুমে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ একদল যুবকের!
অন্যদিকে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুকুমার বেরার বক্তব্য, ওই শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন একাধিক কাজ করে চলেছেন দীর্ঘদিন ধরে। স্কুলের স্বার্থে তাকে পরীক্ষার কাজে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। ওনাকে নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় সংগ্রামী যৌথমঞ্চের সদস্য সুমন ঘোষ জানান, বরুণা সৎসঙ্গ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুলের সহ শিক্ষকের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছেন। এটা কাম্য নয়।
এডিআই ঘাটাল মানবেন্দ্র ঘোষ অবশ্য এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। তিনি শুধু মাত্র জানান, ‘একটি ইমেল পেয়েছি ওই শিক্ষকের তরফে, সম্পূর্ণ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখব’। আর এই ঘটনা প্রকাশ্য আসতেই রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ঘাটাল জুড়ে।