Jalpaiguri News : পায়ে বাঁধা আংটি, ফোন নম্বর! পায়রা ঘিরে রহস্য – jalpaiguri a pigeon found mystery arises


রনি চৌধুরী, জলপাইগুড়ি:
দেখতে সাধারণ। ধূসর। পায়ে বাঁধা আংটি। স্টিকারে লেখা রয়েছে একটি নাম। মোবাইল নম্বরও। গানে, গল্পে, সিনেমায় বার বার উঠে আসা এমনই এক ‘কবুতর’ নিয়ে এখন জোর জল্পনা জলপাইগুড়ির প্রধান পাড়ায়। কেউ বলছেন, গুপ্তচরবৃত্তির জন্য পাঠানো হয়েছে তাকে। কারও মতে ওসব চরবৃত্তি নয়, ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’র সেই ‘কবুতর যা, যা, যা..’ ডাক দিয়ে প্রেমের বার্তা পাঠানো হয়েছে। ফলে, গল্পের সেই কবুতর এখন উড়ে বেড়াচ্ছে সদর ব্লকের বোয়ালমারির প্রধান পাড়ায়।

Leopard Video: কাঁটাতার পেরিয়ে ভূস্বর্গে ‘অনুপ্রবেশ’ পাক চিতাবাঘের, সতর্ক প্রশাসন
রহস্যজনক কবুতর বা পায়রাটিকে গত শনিবার দুলাল সরকার নামে এক ব্যবসায়ীর দোকানের টিনের চালে দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে ছিল সে। এগিয়ে গিয়ে সহজেই ধরে ফেলেন দুলাল। পায়রাটিকে অসুস্থ বলে সন্দেহ হওয়ায় আলতো করে মাথায় হাত দিয়ে আদরও করেন। পায়ের দিকে নজর পড়তেই ঘোর কাটে তাঁর। পায়ে জড়ানো রয়েছে একটি আংটির মতো বস্তু। সঙ্গে স্টিকারে লেখা রয়েছে নাম ও মোবাইল নম্বর। দুলাল বলেন, ‘নম্বরটি হিমাচল প্রদেশের। নাম লেখা রয়েছে এম ডি আকবর। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করতে পারিনি।’

Trekking In Kalimpong : জলপাইগুড়ির ক্লাবের উদ্যোগে কালিম্পংয়ে ট্রেকিং, ৩ ঘণ্টা হেঁটে দলগাঁও ভিউ পয়েন্টে
যাঁরা পায়রা চেনেন তাঁদের বক্তব্য, এটি গিরিরাজ প্রজাতির পায়রা। এক সময়ে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহার করা হতো। পায়রার পায়ে ও পাখনার আড়ালে লুকোনো থাকত গোপন খবর। এক্ষেত্রেও হয়তো এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় তথ্য পাচার করা হচ্ছিল। মাঝপথে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ধরা পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল বিশ্বাস বলেন, ‘মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও ফোন ঢুকছে না। নম্বরটি যেহেতু হিমাচল প্রদেশের দেখাচ্ছে, তাই আমাদের সন্দেহ, পায়রাটি হিমাচল প্রদেশ থেকে উড়ে এসেছে।’ জলপাইগুড়ি থেকে হিমাচল প্রদেশের দূরত্ব প্রায় সাড়ে বারোশো কিলোমিটার। পায়রার মতো পাখির পক্ষে এতটা পথ সত্যিই কি পাড়ি দেওয়া সম্ভব? প্রশ্ন রয়েছে বাসিন্দাদের মনেও।

Kolkata Weather: পয়লা চৈত্রেই বছরের প্রথম কালবৈশাখী? শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গে
যদিও এতে আশ্চর্য হচ্ছেন না পাখি বিশেষজ্ঞ তথা জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক ড. রাজা রাউত। তিনি বলেন, ‘মোঘল আমলে প্যাসেঞ্জার পিজিয়ন প্রজাতির পায়রাকে গুপ্তচর বৃত্তির কাজে ব্যবহার করা হতো। এই প্রজাতির পায়রা আড়াই হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিত খুব সহজেই। আজ প্যাসেঞ্জার পিজিয়ন প্রজাতির পায়রা লুপ্ত হয়ে গিয়েছে।

Darjeeling Mail : দার্জিলিং মেলে হাপিশ মোবাইল-ব্যাগ, রেল পুলিশের দ্বারস্থ অশোক ভট্টাচার্য
অন্যদিকে, গিরিরাজ প্রজাতির পায়রা দেড় হাজার কিলোমিটার উড়ে যেতে পারে। তবে আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে পায়রাকে গুপ্তচর বৃত্তির কাজে ব্যবহার, তাও আবার হিমাচল প্রদেশ থেকে জলপাইগুড়ি, এই ভাবনায় আমার সন্দেহ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করুক।’ সন্দেহজনক পায়রা উদ্ধারের ঘটনাকে অবশ্য হাল্কা ভাবে নেয়নি জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। আইসি অর্ঘ্য সরকার জানিয়েছেন, ‘পায়রাটি অসুস্থ। চিকিৎসা চলছে। যে নাম ও মোবাইল নম্বর মিলেছে সেই নম্বরে যোগাযোগ করে আসল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’

সপ্তাহ দুয়েক আগে একটি পায়রা উড়ে এসেছিল পুরীর কোনারক এলাকায় মাছ ধরার ট্রলারে। তার পায়ে বাঁধা ছিল ক্যামেরা। গায়ে লেখা ছিল সাঙ্কেতিক বার্তা। জলপাইগুড়ির পায়রার পায়ে ক্যামেরা বা চিপ না থাকলেও অনেকে দুইয়ে দুইয়ে চার করছেন। গল্পের গোরু গাছে ওঠাতে, থুড়ি আকাশে ওড়াতে দোষ কী!



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *