Recruitment Scam In West Bengal: কোটি টাকার দুর্নীতির প্যান্ডোরা বক্স খুলেছে রবি মাস্টারের হাতে! ‘কি ম্যান’-কে কত টাকা দিল ইডি? – enforcement directorate enter recruitment scam accused ayan seal and shantanu banerjee flat help of a lock breaker


সুজয় মুখোপাধ্যায় | এই সময় ডিজিটাল

শনিবারে রবির কেরামতিতে খুলল নিয়োগ দুর্নীতির ‘প্যান্ডোরা বক্স’। অয়ন শীলের সল্টলেকের অফিসের মতো তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর জয়েন্ট ফ্ল্যাটেও মিলেছে দুর্নীতি চক্রের একাধিক সূত্র। কিন্তু সেই সূত্রের মাঝে ‘দুর্গম গিরি, কান্তার মরু…’-এর মতো বাধা হয়ে দাঁড়ায় পাঁচ ছয়টি তালা ও বায়োমেট্রিক লক। তখন সহায় একমাত্র রবি।

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে দোষীদের ধরতে জাল বিস্তার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । আর তাদের জালেই ধরা পড়েছে একের পর এক শাসকদলের হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রী।

ইডির দক্ষতাকে টেক্কা দিতে পারেনি কেউ। শুধু করলেও “হার” মানতে হয়েছে অত্যাধুনিক তালার কাছে। কিন্তু তখন হাজির মুশকিল আসান চুঁচুড়ার রবি পালে। চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়ের পাশেই বিখ্যাত রবির তালা চাবির দোকান। গত শনিবার চুঁচুড়া অয়ন শীলের আবাসনে তদন্তে আসে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টটোরেট।

Ayan Sil Recruitment Scam: ‘…ও এমন করেছে!’ বিশ্বাসই করতে পারছেন না শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়নের প্রতিবেশীরা

শান্তনু ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত এই অয়ন শীল। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তাঁর ফ্ল্যাটের সদর দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে ইডি আধিকারিকরা। যদিও তার অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক লক খুলতে পারছিলেন না। তখনই দু’জন ইডি আধিকারিকরা তালা চাবির কাজে দক্ষ রবিকে ডেকে আনে।
ছাপোসা মানুষ হঠাৎ ইডির নজরে আশায় প্রথমে কিছুটা হতচিত হয়ে যান রবি। যদিও পরে তাদের গাড়িতে করে শান্তনু ও অয়নের ফ্ল্যাটে আসে রবি। দায়িত্বে পড়ে ছয়-সাত তালা খোলার।

দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও শেষমেষ রবির কেরামতিতে “মাস্টার কী”-এর ব্যবহারে অবশেষে সমাধান সেই তালা রহস্যের। রীতিমতো অসাধ্য সাধন করে ফেলেন রবি। তাঁর চাবির জোরেই উন্মোচিত হয় নিয়োগ দুর্নীতি সহ একাধিক বেআইনি কাজের তথ্য প্রমাণ। যার জেরে সামনে আসে কোটি কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতি। এরপরে অয়ন শীলর ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণে তথ্য পায় ইডি আধিকারিকরা।

Sweta Chakraborty Ayan Sil: অয়ন ঘনিষ্ঠ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শ্বেতার চাকরিও আতস কাচের তলায়, মুখ খুলল পুরসভা

ইডির সহযোগিতা করতে পেরে দারুণ খুশি চাবিওয়ালা রবি পাল। কিছুটা হাসিমুখে রবি বলে, ‘সেদিন হঠাৎ দুই বাবু তার কাছে এসে বলেন তাকে যেতে হবে কাজ আছে। প্রথমে কিছুই বুঝতে পারেনি সে। তবে তারপর তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা নিজেদের পরিচয় দিতে যেতে রাজি হন রবি। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চুঁচুড়ার অয়ন শীলের আবাবসনে। সেখানে গিয়ে অয়ন ও শান্তনুর ফ্ল্যাটের অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক লক খোলার কাজের দায়িত্ব পড়ে তাঁর ওপর।

গোটা দিন ধরে প্রায় ৬-৭ টি তালা খোলার কাজের দায়িত্ব পড়ে রবির। অবশেষে ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে শেখা গুরুমন্ত্রে। বাবার কাছ থেকেই তাঁর চাবি বানানোর কাজে হাতে খড়ি।

Ayan Sil Recruitment Scam: অয়নের অফিস থেকে পুরসভা দুর্নীতির নথিতে কানুদার নাম, কে তিনি?

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চুঁচুড়া কোর্টের সামনে রাস্তায় বসে চাবি তৈরির কাজ করছেন রবি। পরিবার রয়েছে তার মেয়ে ও স্ত্রী। ছোট্ট পরিবার চালাতেই তাকে হিমশিম খেতে হয়। তবুও নানাবিধ একঘেয়ে কাজের মধ্যে ইডি-এর ডাক পেয়ে এমন রোমহর্ষক কাজের অভিজ্ঞতায় উচ্ছ্বসিত সে।

Sweta Chakraborty Ayan Sil: অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে শ্বেতার ব্যাঙ্কে পাঠানো টাকার উৎস কী? মুখ খুললেন মডেল-অভিনেত্রী

রবির মাস্টার কি-এ খুলল কোটি টাকার দুর্নীতির গোলোক ধাঁধার এক মুখ। তার জন্য পারিশ্রমিকও পেলেন ১৪০০ টাকা। পারিশ্রমিকের থেকে অনেক দামি তাঁর এদিনের অভিজ্ঞতা বলে দাবি করলেন রবি পাল। চুঁচড়ার এই চাবিওয়ালার কথায়, এতদিন টিভিতে তিনি রোজ খবর দেখতেন। মনের মধ্যে সুপ্ত বাসনা ছিল কোনওদিন তিনিও যাতে খবরের শিরোনামে আসেন। কিন্তু, সেই স্বপ্ন কোনওদিন সত্যি হবে তা তিনি ভাবতে পারেননি। ইডি আধিকারিকদের জন্য কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার কাজ স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে এক কথায় বলা যেতে পারে ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ রবির জীবনে বসন্ত।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *