Zoological Survey Of India : সুন্দরবনের শিকারি কৃমির খোঁজ জেডএসআই-এর গবেষকের – zsi research mahasweta guha found a microscopic predator from paddy field in sundarban


কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়
ধানখেতে ঘুরে ঘুরে গাছের গোড়ায় কী খোঁজেন মহিলা? নিজেকে জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (ZSI) গবেষক বলে পরিচয় দেওয়া উনি কি আদৌ সেসব কাজে যুক্ত, নাকি কোনও তুকতাক করছেন? গত এক বছর ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২৯টি ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের এমনই সন্দেহের মুখে পড়তে হয়েছে প্রতাপনগর গিরিধারী হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষিকা মহাশ্বেতা গুহকে। গায়ে মাখেননি। অধ্যাবসায়ের ফল মিলতে দেরি হয়নি।

ধানখেত থেকে তিনি খুঁজে পেয়েছেন আণুবীক্ষণিক এক শিকারি প্রাণীর। গোলকৃমি গোত্রের এই প্রাণীই আগামী দিনে ম্যানগ্রোভ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে আশা ZSI-এর। মহাশ্বেতার বাড়ি সন্দেশখালিতে।

North 24 Parganas News : শিল্পীর তুলির আঁচড়ে গাছ হয়ে উঠেছে আস্ত ক্যানভাস! হাবড়ার সঞ্জয়কে চেনেন?
পড়ান প্রতাপনগরে আর গবেষণা করেন ZSI সদর দপ্তর নিউ আলিপুরে। এর পর রয়েছে সংসারের দায়িত্বও। সব দিক সামলে ফিল্ড ওয়ার্ক চালিয়ে যাওয়া সহজ নয়। মহাশ্বেতার কথায়, “বিশেষ এক ধরনের চালুনি দিয়ে মাটি ছেঁকে অতি ক্ষুদ্র ‘নিমাটোড’ বা গোলকৃমি প্রজাতির প্রাণীর খোঁজ করাটাই আমার গবেষণা ছিল।”

সেই কাজ করতে গিয়েই পদে পদে নানা বাধার মুখে পড়তে হয়েছে ওঁকে। তবুও না দমে কাজ এগিয়েছেন। গবেষক জানাচ্ছেন, মাটি ছাঁকার পর বাইনোকুলার মাইক্রোস্কোপে অনুসন্ধান চালিয়ে আগে গোলকৃমিদের আলাদা করতে হয়। এই করতে গিয়ে বিশেষ এক ধরনের কৃমির খোঁজ পান তিনি।

Sundarban Tour : সুন্দরবনে পর্যটকরা, স্বস্তি ব্যবসায়ীদের
সরু লম্বাটে এবং গোল শরীর, মুখের মতো অংশে ধারালো দাঁতের সারি। এই দাঁত দিয়েই নানা প্রজাতির ক্ষতিকর কৃমিকে শিকার করে টাইগ্রনকইডিস জয়রাজপুরি। মহাশ্বেতার রিসার্চ গাইড বিশ্বভেঙ্কট গাঁতাইত বলছেন, “কৃমিতে শুধু প্রাণীরা নয়, গাছেরাও আক্রান্ত হয়। গোলকৃমির একাধিক প্রজাতি রয়েছে যারা বিভিন্ন গাছের ক্ষতি করে। মাটির গভীরে থাকার ফলে কীটনাশক দিয়ে এদের মারা যায় না। কিন্তু নতুন খোঁজ পাওয়া এই কৃমি ক্ষতিকর কৃমিদের মেরে ফেলে আমাদের উপকারই করে। সদ্য খোঁজ মেলা এই কৃমি নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন আছে।”

Mid Day Meal : মিড-ডে মিলে অডিটের মধ্যে নথি ‘উধাও’, বিড়ম্বনায় স্কুল
ZSI অধিকর্তা ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় এমন শিকারি কৃমির খোঁজ পাওয়ার ঘটনায় উচ্ছ্বসিত। তিনি বলছেন, “এই খোঁজ শুধু যুগান্তকারী বলব না, এর মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ রক্ষায় এই ধরনের কৃমি বড় হাতিয়ার হতে পারে। শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, নানা ধরনের পরজীবীর আক্রমণেও ম্যানগ্রোভের বিরাট ক্ষতি হয়। সাধারণত আমরা বিপর্যয়ে গাছ নষ্টের দিকে নজর দিই, কিন্তু অসুখে গাছ নষ্ট হলে তার সমাধানের চেষ্টা কমই হয়। সদ্য খোঁজ মেলা এই অণুজীবের সাহায্যে হয়তো কীটনাশক ছাড়াই ম্যানগ্রোভ রক্ষা করা সম্ভব হতে পারে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *