অযোগ্যতা, আর্থিক দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে বর্ধমান জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শ্যামল কুমার গাঙ্গুলীকে দ্রুত অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন আদালতের এপিপি’রা। বর্ধমান বার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা এপিপি সদন তা’র অভিযোগ, “বর্তমান পাবলিক প্রসিকিউটরের জন্য সরকারের মুখ পুড়ছে। কার্যত তিনি যেভাবে পাবলিক প্রসিকিউটর পদে বসেছেন তা নিয়ম বিরুদ্ধ। সিডিউল কাষ্ট অ্যাক্টোসিটি অ্যাক্টে উনি নো অবজেকশন দিয়ে বিপুল টাকা নিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মামলার বিবাদি পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামলা লঘু তথা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষের কাছে টাকা নিচ্ছেন, বড়বড় কেসে জামিন হচ্ছে।”
এমনকি পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসে বসেই টাকা পয়সা নিচ্ছেন বলেও তার অভিযোগ। এদিন জেলা বিচারক সহ জেলাশাসকের কাছে এই ব্যাপারে স্মারকলিপি দিয়েছেন এপিপি’রা। প্রায় ২৮ জন এপিপি এই স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন। ফলে এই বিষয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে গোটা আদালত জুড়ে।
সিনিয়ার এপিপি বিশ্বজিৎ দাস এই বিষয়ে জানিয়েছেন, “যতদিন না এই পাবলিক প্রসিকিউটর -কে অপসারণ করা হচ্ছে ততদিন আমরা আদালতের কাজ করব না। সব কিছুর একটা সীমা থাকে। এই পাবলিক প্রসিকিউটর সেই সব সীমা অতিক্রম করেছেন। একজন পাবলিক প্রসিকিউটর কিভাবে সাধারন মানুষের থেকে টাকা নিতে পারেন? আর এদিকে তিনি বহাল তবিয়তে নিজের অফিসে বসে টাকা নিচ্ছেন, সব কেস এদিক ওদিক উলটে পালটে দিচ্ছেন। এতে সাধারন মানুষ যে কতটা ক্ষতিতে পড়ছেন তা উনি ভাবছেন না। সেই সঙ্গে আইনজীবীদের বদনাম হচ্ছে এসব কারণে, বিশেষ করে সরকারী আইনজীবীদের।”
যদিও এই বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর শ্যামল কুমার গাঙ্গুলীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় বিভিন্ন মামলার ভবিষ্যত নিয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যেসব মামলা সরকারী আইনজীবীরা লড়ছেন, সেইসব মামলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা পড়েছেন মহা সমস্যায়।
আজ আদালতে এসে এই ঘটনা সম্পর্কে শুনে এরকমই এক ব্যক্তি খেদের সুরে জানান, “একেই মামলার তারিখ পেতে পেতে মাসের পর মাস লেগে যায়। সেই সঙ্গে আবার যদি আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলে, তাহলে মামলা শেষ হতে যে কতদিন সময় লাগবে, সেটাই ভাবতে হচ্ছে।”