নাসিরার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ২০১৫ সালে আব্বাস আলিকে তিনি পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিলেন স্কুলে চাকরির জন্য। তাঁর মতো আরও কয়েকজনও টাকা দেয়।টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন নাসিরা। বিকাশ ভবনে তাদের নিয়ে গিয়ে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। নাসিরার দাবি, বিকাশ ভবনের পিছন দিকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।সেখান থেকে গাড়ি করে আট জন আটজন করে তুলে বিকাশ ভবনের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে একটা ডায়েরিতে একজন নাম আর ফোন নম্বর লিখে নেন। ব্যাস ইন্টারভিউ হয়ে যায়।
এরপর চাকরি না হওয়ায় আব্বাস আলির থেকে টাকা ফেরত চাইলে আব্বাস অয়ন শীলের নাম করে। অয়ন শীলের ফ্ল্যাটেও গিয়েছিলেন তারা বলে জানান নাসিরা। সেখানে অয়ন শীল তাদের একটি কাগজ বের করে দেখান। আর বলেন, লিস্টে যাদের নাম নেই তাদের হবে না। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে আব্বাসকে ধরেন নাসিরা সহ আরও কয়েকজন।পুলিশেও জানানো হয় তাতে অবশ্য কিছু লাভ হয়নি।
আব্বাস আলি জানান,তিনি অয়ন শীলকে চিনতেন পান্ডুয়া পঞ্চায়েত থেকে।পরে নিজে ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল সদস্য হন।২০২১ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।সেই থেকে তাঁর অনেক শত্রু। তিনি কারও থেকে টাকা নেননি। তবে দেবানন্দপুরের শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় টাকা তুলেছিলেন অয়নের হয়ে।সেটা তিনি জানতেন। শ্রীকুমার তাঁকে বিষয়টি বলেছিলেন। তাঁর কাছে যারা এসেছিল সে সময় চাকরির বিষয়ে জানতে তাদের আমি বলেছিলাম শ্রীকুমারদা খুব ভালো মানুষ তাকে বিশ্বাস করা যায়।কিন্তু অয়ন শীলের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ ছিল না বলে দাবী আব্বাস আলির।
এই প্রসঙ্গে পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ”চোরের মায়ের বড় গলা। চিৎকার করে লাভ নেই। দীর্ঘদিন ধরে এরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু, লকেট এরা চোর ধরো জেল ভরো বলে চিৎকার করছে। ওদের ধরবে কে? আমি তো শুনেছিলাম অয়ন শীলের সঙ্গে ওদের ভালো সম্পর্ক ছিল। সিপিএম-এরও তো সব ধরা পড়ছে। আমাদের দলে কেউ দুর্নীতিতে যুক্ত হলে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক কষ্ট করে দলটা তৈরি করেছেন। তিনি কারওকে কিন্তু চুরির কথা বলেননি। কেউ চুরি করলে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। এখন আমি দেখতে চাই বিজেপি এঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়।”
হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক সুরেশ সাউ এই অভিযোগ শুনে বলেন, ”সত্যি যদি এরকম ঘটে থাকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে দল। তৃণমূল যেমন অনুব্রত মণ্ডলকে ছেড়ে রেখে দিয়েছে তেমন ছেড়ে রাখবে না। আমাদের দল এমন নয়। সারা ভারতবর্ষে ভারতীয় জনতা দলই এমন দল যে দোষী প্রমাণিত হলে নিজের দলে কার্যকর্তাকেও ছাড়ে না।”