তবে অনশন উঠলেও আন্দোলন অব্যাহত থাকছে বলেই জানিয়েছেন মঞ্চের আর এক আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ মিত্র। উল্লেখ্য, ৪৪ দিনের মাথায় অনশন উঠল। ভাস্কর বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনে সরকারের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। কর্মচারী-শিক্ষকদের তো বটেই, পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও বলব, আমাদের সঙ্গে থাকুন। রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি বদলানোর যে পণ আমরা করেছি, সাধারণ মানুষ পাশে থাকলেই তা সম্ভব হবে।’
তবে এরই মধ্যে ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ মনোভাব নিয়ে রাজ্য সরকার কর্মচারীদের বেতন কাটা বা চাকরি জীবন থেকে একদিন বাদ দেওয়া ছাড়াও নির্বিচারে বদলির নির্দেশও জারি করছে বলে অভিযোগ করেছে একাধিক কর্মচারী সংগঠন। কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্বের বক্তব্য, শুক্রবারই নবান্নর কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দপ্তরের জারি করা নির্দেশিকায় রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দপ্তর থেকে ৬ জন কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে জঙ্গলমহলের নানা জেলায়।
নবান্নর স্বরাষ্ট্র, ভূমি, অর্থ দপ্তরের এই কর্মীদের বদলি করা হয়েছে বাঁকুড়ার খাতড়া, ওন্দা, তালড্যাংরা, পুরুলিয়ার মানবাজার, বান্দোয়ান, বাঘমুন্ডিতে। আবার উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েক জন কর্মচারীকেও নানা জায়গায় বদলির নির্দেশ জারি করা হয়েছে। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরীর বক্তব্য, ‘যাঁরা বদলি হয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু এতে কর্মচারীদের মনোবলে চিড় ধরেনি। হুগলি-সহ নানা জায়গাতেই শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারীরা সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়েই শো-কজের জবাব দিতে গিয়েছেন।’
বিরোধী রাজনৈতিক ভাবাদর্শের কর্মচারী সংগঠনগুলির অভিযোগ, সরকার যে ধারায় বদলি করেছে, তা সাধারণ ভাবে সেনাবাহিনীর বদলির ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়। অন্য দিকে, সরকারি এক কর্তার যুক্তি, ‘বদলি সরকারি চাকরিরই অঙ্গ। নির্দেশিকায় কোনও শাস্তিমূলক বদলির কথা বলা হয়নি।’ তবে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষাদপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন, এমন কর্মীদের শো-কজের জবাব সন্তোষজনক না হলে এক দিনের বেতন কাটা যাবে।