নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলকে। তাঁকে গ্রেফতারির পরেই উঠে আসে আরও এক রহস্যময়ীর নাম-শ্বেতা চক্রবর্তী। কামারহাটি পুরসভায় সহকারী ইঞ্জিনিয়র তিনি। এর আগেই তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে ED-CBI তলব করেনি। অয়নের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও মুখ খুলেছিলেন তিনি। কিন্তু, এরপরেও সামাজিক ক্ষেত্রে পদে পদে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁকে- এই সময় ডিজিটাল-এর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন তিনি। একইসঙ্গে, অয়নের স্ত্রীর মন্তব্যের ‘অন্তর্নিহিত অর্থ’-এর ভাবসম্প্রসারণ করতেও দেখা গেল শ্বেতাকে।
আমি চাদরমুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি দু’জন অচেনা লোক।
শ্বেতা চক্রবর্তী
এই সময় ডিজিটাল: আপনাকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাট কৌতুহল তৈরি হয়েছে। কাজের জায়গায় কি এই বাড়তি কৌতুহলের জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে?
শ্বেতা চক্রবর্তী:আমার অফিসের সামনে সবসময় মিডিয়ার ভিড়। আমাকে রাস্তার মধ্যে গাড়ির নিয়ে ধাওয়া করা হচ্ছে। আগের দিন আমার রাস্তার মধ্যে অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গিয়েছিল। আমি যা বলার বলে দিয়েছি। আমি মন দিয়ে কাজ করতে পারছি না। ডিপার্টমেন্টে অনেকে ঢুকে যাচ্ছে।
![sweta chakraborty sweta chakraborty](https://static.langimg.com/thumb/67091961/Eisamay.jpg?width=540&height=405&resizemode=75)
শ্বেতা চক্রবর্তী (ছবি সৌজন্যে ফেসবুক-Sweta Chakrobarty)
এই সময় ডিজিটাল: আপনি তো কামারহাটি পুরসভায় কাজ করছেন। সহকর্মীদের এই মুহূর্তে আপনার প্রতি কী মনোভাব?
শ্বেতা চক্রবর্তী: ওরা অত্যন্ত সহযোগিতা করছে। আমি তো দোষী প্রমাণিত হয়নি। আমাকে ED-CBI ডাকেনি। আদালত আমাকে দোষী বলে বিবেচনা করেনি। তার আগেই যদি সামাজিকভাবে আমাকে প্রতিমুহূর্তে এভাবে নিগ্রহের শিকার হতে হয়, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
গত রবিবার আমি ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ ভোরবেলা বাড়িতে দু’জন অচেনা লোক বাড়িতে চলে আসে। তারা বাবাকে নিজেদের পরিচয়ও দেয়নি। বাবা দরজা খুলে দেয়। তারপর একপ্রকার জোর করেই তারা আমার বেডরুমে ঢুকে যায়। আমি চাদরমুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি দু’জন অচেনা লোক।
এই সময় ডিজিটাল: তারা কারা? কারা এভাবে আপনার বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করছে?
শ্বেতা চক্রবর্তী: আমি জানি না। আমার বাবা বয়স্ক মানুষ। তাঁর পেসমেকার বসানো রয়েছে। তারা বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপরেও আমার বেডরুমে তারা ঢোকার চেষ্টা করে। আমার দৈনন্দিন জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সবকিছুই তদন্তসাপেক্ষ। আমি তো কোনও তলব পায়নি! তার আগেই আমি কাঠগোড়ায়। আমার মান সম্মান সব চলে যাচ্ছে।
এই সময় ডিজিটাল: আপনি তো বিনোদন জগতে কাজ করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে কি ফের টলিপাড়ায় পা শক্ত করার চেষ্টা করবেন?
শ্বেতা চক্রবর্তী: সেটা পরবর্তী ভাবনা। এই মুহূর্তে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই অন্য কিছু ভাবতে পারছি না।
![sweta chakraborty News sweta chakraborty News](https://static.langimg.com/thumb/67091961/Eisamay.jpg?width=540&height=405&resizemode=75)
এই সময় ডিজিটাল: আপনি কামারহাটি পুরসভায় তিনদিন কোনও কারণ না জানিয়ে ছুটি নিয়েছিলেন। আপনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে শোনা যাচ্ছিল। কোনও ব্যবস্থা কি করা হয়েছে?
শ্বেতা চক্রবর্তী: আমি তিনদিন কাজে যায়নি কারণ সংবাদ মাধ্যমে হঠাৎ করে নিজের নাম এবং ছবি দেখতে পাই। অত্যন্ত অপ্রস্তুতে পড়ে যাই। আমি শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তাই ছুটি নিয়েছিলাম। এরপর আমি সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলি। যা যা বলার আমি বলেছি। আমি কোনওভাবেই কোনও দুর্নীতিতে জড়িয়ে নেই। এরপর আমি অফিসে যোগ দিয়েছি।
এই সময় ডিজিটাল: অয়নের স্ত্রী কাকলি শীল বলেছেন, “অয়ন ও শ্বেতার কথা অনেক পরে জেনেছি। আগে জানলে বাধা দিতাম। যখন জানলাম তখন কিছু করার ছিল না।” কাকলির এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কী বলবেন?
শ্বেতা চক্রবর্তী: দেখুন আমার মনে হয় কথাটা তিনি ঠিকভাবে গুছিয়ে বলতে পারেননি। ওঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আমার সঙ্গে সিনেমা করেছেন অয়ন সেই বিষয়ে কী বলবেন। তিনি হয়তো বলতে চেয়েছেন যে সিনেমাতে মোটা টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে জানতেন না। জানলে আটকাতেন। আমার মনে হয় তিনি এই কথাটাই বলতে চেয়েছেন। কিন্তু, গুছিয়ে বলতে পারেননি।