বিক্রম দাস: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ভবিষ্যতে তদন্ত হতে পারে তা আগেভাগে বুঝেই জাল বিছিয়েছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। গাজিয়াবাদের ওএমআর শিট মূল্যায়নকারী সংস্থার বাঙালি অফিসার নীলাদ্রি দাসকে পেয়ে চাকরি বিক্রির চক্রের কাজ আরও সহজ হয়েছিল। সুবীরেশ-নীলাদ্রি আঁতাঁতেই চলছিল কোটি কোটি টাকায় চাকরি কেনাবেচা। চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল সিবিআই।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নাইসা-র তরফে ওএমআর শিট মূল্যায়নের পর তা পাঠানো হত এসএসসি-র অফিসে। সেখানে নম্বর কারচুপিতে সাহায্য করতেন এসএসসি-র কর্মী পর্ণা বসু। এই কারচুপি যাতে ধরা না পড়ে, তার জন্য ওএমআর শিট ফের ফেরত পাঠানো হত মূল্যায়নকারী সংস্থা নাইসা-র কাছে। সেখানে আসল ডেটা শিটেও বদলে যেত নম্বর। সংস্থার তরফে বাঙালি হিসেবে নীলাদ্রিকে এসএসসি-র সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব দেওয়ায় সুবীরেশের কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল বলে চার্জশিটে দাবি করেছে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, ওএমআর শিটে নম্বর কারচুপির জন্য নীলাদ্রির সঙ্গে এসএসসি-র প্রায় ১ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছিল দাবি সিবিআই-এর। সিবিআই সূত্রে খবর, কাদের নম্বর ম্যানিপুলেট করা হবে, তার তালিকা নীলাদ্রির হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে মিলেছে। এসএসসির এক কর্তার নম্বর থেকে তালিকা নীলাদ্রির কাছে পৌঁছয়। প্রথমে মোবাইলে পাঠানো হত তালিকা। পরে নীলাদ্রি তাঁর সংস্থার লোক পাঠিয়ে তালিকার হার্ড কপি সংগ্রহ করতেন। এমনকি প্রাপ্ত মেসেজ পাঠানো হত তাঁর সংস্থার কর্মীকেও। যাঁরা সার্ভারে নম্বর নথিভুক্তর কাজ করতেন বলে দাবি তদন্তকারী অফিসারদের।
সিবিআই সূত্রের খবর, এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বর্তমানে জেলবন্দি সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এমন অনেক প্রার্থীর চাকরির জন্য সুপারিশ করতেন, যাঁরা পরীক্ষায় পাস-ই করতে পারেননি। প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশের নির্দেশে এসএসসি-র তৎকালীন প্রোগ্রাম অফিসার সেই ফেল করা প্রার্থীদের নম্বর বাড়াতেন। যাতে তাঁরা প্যানেল বা ওয়েটিং লিস্টে চলে আসেন। সুবীরেশ ভট্টাচার্য কথা মতোই এসএসসি-র নথিতে থাকা অকৃতকার্য প্রার্থীদের নম্বর যেভাবে বাড়ানো হত, ঠিক তেমনই NYSA-র হেফাজতে থাকা নথিতেও সেই প্রার্থীর নম্বর একইভাবেই বাড়িয়ে দেওয়া হত।
আরও পড়ুন, দুর্নীতির অসীম সোনার খনিতে আরও প্রভাবশালীদের নাম! আদালতে বিস্ফোরক ইডি