জেলা শহরের একটি বেসরকারি হোটেলের প্রেক্ষাগৃহে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করলেন গৌতম দেব। এদিন বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি জানান, “উত্তরবঙ্গের প্রায় সব কটি জেলার মাটি আমার চেনা। মানুষের অভাব অভিযোগ নিজে কানে শুনতে চাই। তাই আমার প্রথম কাজ হবে জেলার ১১০০ বুথে পায়ে হেঁটে পৌঁছনো। আমাদের লক্ষ্য হবে প্রতিটি বুথে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট সুনিশ্চিত করা। যার প্রতিফলন লোকসভা ভোটেও পড়তে বাধ্য”।
জেলা গঠন থেকে শুরু করে আলিপুরদুয়ারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত পরিমাণ চোখে দেখা ‘উন্নয়ন’ করার পরেও মানুষ কেন বারবার বিমুখ হচ্ছেন, সেই কারনের গোঁড়ায় ঢুকতে চান তিনি। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় একাধিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসে। সেই ঘটনায় আলিপুরদুয়ার জেলায় ঐতিহাসিক পতন ঘটে শাসকদলের।
জেলার ৫ টি বিধানসভা আসনে জয়ী হয় বিজেপি। সেই ঘটনায় সাংগঠনিক ভাবে সবাই একমত নাও হলেও, কেউ ভিন্ন পথে এগোলে তা মানা হবে না বলে তিনি সাফ জানান। সবাইকে এক ছাতার তলায় কাজ করে নাম না করে (বাম কংগ্রেস) জোটকে পরাস্ত করতে হবে, একথা বলেন গৌতম দেব। তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতি নিয়ে উদয়ন বাবু কী বলেছেন তার বিচার করবে দল”।
দুর্নীতিতে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারির ঘটনা নিয়ে গৌতম দেব বলেন, “যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের নিয়ে দল কোনও আপোষ করেনি। আমরা নানান সরকারি প্রকল্প নিয়ে বুথে বুথে মানুষের কাছে যাব। মানুষের অভাব অভিযোগ থাকতে পারে। যে প্রশ্নের জবাব থাকবে তা মানুষের কাছে তুলে ধরব, নয়তো মানুষের অভিযোগ মাথা পেতে নেব”।
এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রকাশ চিক বড়াইক বলেন, “গৌতম দেব একজন অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ওনার দেওয়া পরামর্শ পাথেয় করলে আখেরে দলই লাভবান হবে”। তবে জেলায় শাসক দলের অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোই এখন গৌতম দেবের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এই বিষয়ে জেলা BJP-র সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাস বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা, যতই বাড়ি বাড়ি যান মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। দুয়ারে সরকার, দিদির দূত ও দিদির সুরক্ষা কবজ নিয়ে তৃণমূল কর্মীরা তো আগে থেকেই বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করছে এবং তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। শাসক দলের নানান দুর্নীতি মানুষ জেনে গিয়েছে। ফলে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা কখনই সাধারণ মানুষের সমর্থন পাবে না”।