অন্য দিকে এসআর-দের কর্তব্যপরায়নতা নিয়ে ইদানীং কিছু অভিযোগ উঠছে বলে খবর স্বাস্থ্য-সূত্রে। এ বার তাই সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ ও তাঁদের উপরে নজরদারিতে পৃথক সেল গঠন করল স্বাস্থ্য দপ্তর।
মঙ্গলবার এই মর্মে একটি আদেশনামা জারি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। চার সদস্যের বিশেষ সেলে রয়েছেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা শাখার উপসচিব ও উপ-অধিকর্তা এবং চিকিৎসা প্রশাসন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ-সচিব ও রাজ্যের উপ-সহ স্বাস্থ্য অধিকর্তা। আদেশনামায় বলা হয়েছে, এসআর-দের বিরুদ্ধে ওঠা যে কোনও অভিযোগ খতিয়ে দেখবে এই সেল।
পাশাপাশি একটি পোর্টালও খোলা হবে। সেই পোর্টালে এক ক্লিকেই জানা যাবে রাজ্যে বর্তমানে কর্মরত অন্তত হাজার দুয়েক সিনিয়র রেসিডেন্ট সম্পর্কে যে কোনও বুনিয়াদি তথ্য। সরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন অবশ্য মনে করছে, এই বন্ড প্রথাটাই তুলে দেওয়া উচিত সাধারণ মানুষের যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার স্বার্থে। তাই সদ্যগঠিত এই সেলকে বাঁকা চোখেই দেখছেন তাঁরা।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, সরকারি চিকিৎসক নন, এমন প্রায় ৭০০ চিকিৎসক প্রতি বছর এমডি-এমএস এবং ডিএম-এমসিএইচ পাশ করেন। গত বছরেও সংখ্যাটা ছিল ৭২০। প্রত্যেককে তিন বছর কাজ করতে হয় সরকারি হাসপাতালে।
তাই সেই হিসেবে বর্তমানে প্রায় ২১০০ সিনিয়র রেসিডেন্ট কর্মরত রাজ্যে। মাসে তাঁরা ৭০ হাজার টাকা করে বেতন পান। তবে অন্য সুযোগ-সুবিধা নেই। কিন্তু কাজের চাপ মারাত্মক। আবার উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর অনেক এসআর নিজের শাখার রোগী দেখারও সুযোগ পান না অধিকাংশ সময়ে।
কেননা, গ্রামীণ, ব্লক, মহকুমা বা জেলা হাসপাতালে নেই ডাক্তারির সিংহভাগ বিশেষজ্ঞ শাখা। এমন পরিস্থিতির কারণেই এসআর-রা কর্তব্যে অবহেলা করে ফেলেন বলে মনে করেন চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যরা।
সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সদ্ব্যবহার না করে বন্ডেড লেবারের মতো সিনিয়র রেসিডেন্ট করে কম বেতনে কাজ করানো হচ্ছে। তিন বছরের মেয়াদ ফুরোলে তাঁদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না করে শূন্য জায়গা ভরাট করা হচ্ছে নতুন ব্যাচের এসআর-দের দিয়ে। এ ভাবে একটা ঠিকঠাক স্বাস্থ্য পরিষেবা চলতে পারে না।”
তাঁর প্রশ্ন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও স্থায়ী চাকরি না-মিললে কি প্রত্যাশিত দায়বদ্ধতা আশা করা যায়? স্থায়ী নিয়োগের বদলে পৃথক সেল খুলে পরিষেবার মান-বৃদ্ধি সম্ভব নয় বলেই মত তাঁর।