প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ডাইনি অপবাদ দিয়ে আহমদপুরের ন’পাড়া গ্রামের এক দম্পতিকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তারপরেই হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই দম্পতির। খুনের পর ওই গ্রামের গ্রামবাসীদের একাংশ গ্রামেরই মোড়ল ও কয়েক জনের বিরুদ্ধে ওই দম্পতিকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে খুনের অভিযোগ তোলে।
মৃতেরা হলেন পাণ্ডু হেমব্রম এবং পার্বতী হেমব্রম। গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, ন’পাড়া গ্রামের মোড়ল রুবাই বেসরা ও আশপাশের আদিবাসী গ্রামের বেশ কিছু মানুষ মনে করেছিল পাণ্ডু এবং তাঁর স্ত্রী পার্বতী ডাইনিবিদ্যা জানেন। সেই সঙ্গে ওই বিদ্যা অভ্যাস করে মানুষজনের ক্ষতি করছেন। এই অভিযোগ তুলে মারাত্মকভাবে মারধর করা হয় তাঁদের।
পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সাঁইথিয়া থানার পুলিশ ও ওই মোড়লকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ভিলেজ পুলিশ ও এই এলাকার সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কাজই হল এই প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে কি ঘটনা ঘটছে বা কি ঘটনা ঘটতে পারে, সেই সম্পর্কে আগাম খবর রাখা, ও সেই খবরের ভিত্তিতে সেই সমস্ত অনভিপ্রেত ঘটনাকে আটকানো। যদি কোনও স্পর্শকাতর বিষয় হয়, তাহলে তৎক্ষণাৎ সেই খবর জানানোর কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।
কিন্তু এই জায়গাতেই চূড়ান্তভাবে অসফল হয়েছেন ওই ভিলেজ পুলিশ ও বাকি সিভিক পুলিশরা। তাই তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে, ও এই বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশের ওই সূত্রটি। এদিকে, এই পাশবিক ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখা দিচ্ছে সমাজের সর্বস্তরে। দেশে এখনও কিভাবে এই মধ্যযুগীয় বর্বরতা চলছে, সেই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
যেখানে মহাকাশে একের পর এক উপগ্রহ পাঠাচ্ছে ভারত, দুর্দান্ত ভাবে এগিয়ে চলেছে মহাকাশ বিজ্ঞানে, সেখানে সেই দেশেরই গ্রামবাংলা মুক্ত হতে পারছে না কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে। ডাইনি অপবাদে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। কিভাবে এখনও ঘটছে এইসব ঘটনা, প্রশাসনের নজরই বা কতটা এক্ষেত্রে, এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে দেশের বৈজ্ঞানিক সমাজ।