নবদ্বীপের ১০ জন ছাত্র ছাত্রী হরিয়ানার আম্বালায় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী জাতীয় জুনিয়র জিমন্যাস্টিক প্রতিযোগিতা ২০২৩-এ দলগত ও ব্যক্তিগত ভাবে বড় সাফল্য লাভ করল। ২৬ থেকে ২৮ মার্চ এই প্রতিযোগিতা চলেছে হরিয়ানার আম্বালা শহরে। নবদ্বীপের শক্তি সমিতি ও ক্রিয়েটিভ জিমন্যাস্টিক অ্যাকাডেমির ছাত্রছাত্রী এই ১০ জন।
এই দলটি বিভিন্ন বিভাগে মোট ৩২ টি পদক লাভ করে নদিয়া ও নবদ্বীপের সেই সঙ্গে গোটা রাজ্যের সুনাম বৃদ্ধি করে এসেছে। তার মধ্যে ছটি সোনা, আঠারোটি রূপো ও আটটি ব্রোঞ্জ পদক রয়েছে। এদিন দুপুরে এই দলটি নবদ্বীপ ধাম রেলস্টেশনে এসে পৌঁছলে নবদ্বীপ শক্তি সমিতির পক্ষ থেকে মালা পড়িয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।
এই জিমন্যাস্টিক টিমের কর্মকর্তা পাপাই সরকার জানান, “নবদ্বীপ শহরে জিমন্যাস্টিকের প্রচলন থাকলেও এই প্রথম এতবড় সাফল্য অর্জন করেছে এখানকার ছেলে মেয়েরা। ভবিষতে যদি এরা কিছুটা সরকারি সুযোগ সুবিধা পায় তাহলে আরও ভাল ফল করতে পারবে। নবদ্বীপের যে সমস্ত জন প্রতিনিধি রয়েছেন তারা যদি একটু এই বিষয়টা নজর দেন ভাল হয়।”
তিনি আরও বলেন, “নবদ্বীপ তথা নদিয়া জেলাতে জিমন্যাস্টিকে প্রতিভার অভাব নেই। অনেক প্রতিভা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এখানে। কিন্তু সঠিক সময় সঠিক পরিচর্যা, সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক প্রতিভা অকালে হারিয়ে যায়। বেশিরভাগ ছেলে মেয়েরাই একটু গরীব পরিবার থেকে উঠে আসা। তাই তাঁদের কাছে অর্থ খরচ করে ভালো জায়গায় গিয়ে প্রশিক্ষন নেওয়া বিলাসিতা মাত্র। এই জায়গাতেই সরকার ও প্রশাসনের একটু সহযোগিতা দরকার। তাহলে বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায় রাজ্যের পদকের অভাব হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “এই খুদে প্রতিভাগুলি সঠিক গাইডলাইন পেলে এশিয়াড বা অলিম্পিক্সেও ভালো ফলাফল করতে পারে।” টুম্পা দেবনাথ, প্রণতি দাশ, প্রণতি নায়েকদের মতো দেশের সেরা জিমন্যাস্টরা বাংলার হয়ে প্রচুর পদক জিতেছেন। তবে বাংলায় জিমন্যাস্টিক্সের কোনও পরিকাঠামো না থাকায় অচিরেই হারিয়ে যাচ্ছে অনেক খুদে প্রতিভা, এই অভিযোগ অনেকদিনের।
এই কারণে বাংলা ছেড়ে অনেক প্রতিভাই পাড়ি জমাচ্ছে ভিন রাজ্যে। এবার এই ১০ জন প্রতিভাশালী জিমন্যাস্টের সাফল্য দেখে সরকারের কিছুটা হলেও টনক নড়ে কিনা, সেই দিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলে।