এ বছর ধুমধাম করে রামনবমী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। আজ ১ কোটি মানুষকে পথে নামানোর ডাক দিয়ে রেখেছে গেরুয়া শিবির। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘বৃহস্পতিবার রাজ্যের ১ কোটি রামভক্ত রাস্তায় থাকবে।’ তৃণমূলের আশঙ্কা, রামনবমীকে হাতিয়ার করে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করতে পারে বিজেপি ও তাদের ঘনিষ্ঠ কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সম্প্রতি ক’জন বিজেপি নেতাকে রামনবমীর দিন অস্ত্র নিয়ে মিছিলের হুঁশিয়ারিও দিতে শোনা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, বিষয়টি পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রীর কানে। বুধবার রেড রোডের ধর্নামঞ্চ থেকে রামনবমীর শোভাযাত্রা নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কিছুতেই নষ্ট হতে দেবেন না। রামনবমীতে অস্ত্র-মিছিলের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে পদ্ম-নেতাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘একজন গুণ্ডা বলছে…টিভিতে রেকর্ড আছে, রামনবমীর দিন যা অস্ত্র পাব, নিয়ে বেরোবো।
দেখব কে কী করতে পারে! আরে তোর যা অস্ত্র আছে, তাই নিয়ে যা। আমি রামবনমীর মিছিল আটকাব না। কিন্তু মনে রেখো, মিছিল আমরাও করব, তোমরাও করবে। রমজান মাসও চলছে। রোজার মাসও চলছে। মুসলিম এলাকায় গিয়ে হামলা করলে মনে রেখো, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’
অতীতে রামনবমীতে বিজেপি নেতাদের অস্ত্র হাতে মিছিল করতে দেখা গিয়েছে। ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে থেকেই শক্তি প্রদর্শনে রামনবমীর শোভাযাত্রায় হাঁটতে শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা। কোথাও কোথাও শোভাযাত্রা ঘিরে অশান্তিও হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মমতা এ দিন যথেষ্ট কড়া বার্তাই দিয়েছেন।
গেরুয়া শিবিরে সপ্তাহ খানেক ধরেই চলছে রামনবমী পালনের তোড়জোড়। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি কোনও শোভাযাত্রা নিয়ে বেরোবে না। কিন্তু দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের শোভাযাত্রায় সামিল হন। বুধবার শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে বিজেপির ধর্নামঞ্চ থেকে শুভেন্দু জানান, এক হাজার বড় মিছিল, দশ হাজার ছোট মিছিল হবে রাজ্যে। পাশাপাশিই শোনা যায় ১ কোটি রামভক্তের সামিল হওয়ার কথা।
পুলিশ সূত্রের খবর, আজ কলকাতায় ৪৩টি মিছিল হওয়ার কথা। এর মধ্যে কাশীপুর রোড ও ওয়াটগঞ্জে দু’টি বড় মিছিল আছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে লালবাজারের সিনিয়র অফিসাররা রাস্তায় ডিউটিতে থাকবেন। বুধবার এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।