এক লপ্তে ৬০৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলির আদেশ জারি করল বিকাশ ভবন। এঁদের মধ্যে ১০৮ জন উচ্চপ্রাথমিক স্তরের। বাকিরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। হালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পড়ুয়া-শিক্ষক অনুপাতে ভারসাম্য রক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কারণ, অনেক স্কুলেই দেখা যাচ্ছে যে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার অনুপাতে শিক্ষক বেশ কম। এর জেরে শিক্ষার গুণগত মান কমছে। উচ্চ আদালত জানিয়েছিল, শিক্ষা প্রাথমিক ভাবে পড়ুয়ার অধিকার। উপযুক্ত সংখ্যক শিক্ষকের অভাবে তাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা চলে না।
এর পরেই নড়েচড়ে বসে শিক্ষা দপ্তর। পাশাপাশি, একাংশ শিক্ষকের মধ্যে পছন্দের স্কুলে (নিজের জেলায় বা বাড়ির কাছাকাছি) বদলির প্রবণতা যে সমস্যাকে জটিল করেছে, তা নিয়ে সরকারি মহলেও সংশয় ছিল না। ‘পছন্দের স্কুলে’ বদলির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছিল। শুক্রবার বিকাশ ভবনের তরফে জারি নির্দেশ শিক্ষক-পড়ুয়া ভারসাম্যের লক্ষ্যে জরুরি পদক্ষেপ। এক সঙ্গে এত জন শিক্ষকের বদলিও অভূতপূর্ব।
এই নির্দেশিকায় দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কলকাতা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বদলিই বেশি। ৪০০-র বেশি শিক্ষক এই গোত্রে পড়ছেন। যেমন, শ্যামবাজার বালিকা বিদ্যালয় থেকে এক শিক্ষিকা বদলি হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার দক্ষিণ বুধাখালিতে।
আবার যাদবপুর বিজয়গড় শিক্ষা নিকেতন থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কারাবেগ চারাঘাটায় ইতিহাসের শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে। ব্যারাকপুর শিক্ষাজেলা থেকে অনেকে বদলি হয়েছেন নদিয়ায়। কয়েক জন হাওড়া থেকে গিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, বাংলা, ভৌতবিজ্ঞানের মতো বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেশি বদলি হয়েছেন।
উচ্চপ্রাথমিক স্তরেও বদলির বড় অংশ কলকাতা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। কিছু শিক্ষক ব্যারাকপুর থেকে বদলি হয়েছেন নদিয়ায়। ইংরেজি ও ভৌতবিজ্ঞানে বদলির সংখ্যাটা চোখে পড়ার মতো।
এক সরকারি কর্তার বক্তব্য, “উচ্চ আদালতের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে শিক্ষায় পড়ুয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। পড়ুয়া-শিক্ষকের ভারসাম্য রক্ষায় এই নির্দেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই আশা রাখি। আরও এক দফা বদলির আদেশ শীঘ্রই বেরোতে পারে।”