তাঁকে নাগালে পেয়েই প্রবীণ ওই টোটো কবি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে, টোটোপাড়ার দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলির কথা তুলে ধরতে চান তিনি। তাঁর ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়ে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাও তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন যে, দ্রুত ধনীরামের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতে সচেষ্ট হবেন তিনি।
দিদির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলে কী কী বিষয় নিয়ে কথা বলবেন?
ওই প্রশ্নের উত্তরে ধনীরাম টোটো বলেন, “আমি রাজনীতি বুঝি না। আমি চাই টোটোপাড়ার সামগ্রিক উন্নয়ন। এখানকার প্রতিভূদের যাতে পরিযায়ী হতে না হয়, এটাই থাকবে আমার প্রথম আবেদন। কারণ প্রকৃতি তো টোটোপাড়াকে প্রচুর সম্পদ ঢেলে দিয়েছেন। ভাবতে পারেন ভুটান থেকে পাথর নিয়ে বাংলাদেশে পদ্মা সেতু গড়ে উঠল। অথচ টোটোপাড়াতেও তো প্রচুর পাথর রয়েছে। আমি চাই, ওই পাথরের ভাণ্ডার উত্তোলন করার ছাড়পত্র দেওয়া হোক। তাতে ফি বছর বন্যা সমস্যারও তো সমাধানের পথ খুলবে। প্রত্যেক বছর বর্ষাকালে ভুটান থেকে পাথর নেমে আসতে আসতে আমাদের তিন নদী তিতি, বাঙরি আর হাউরির নদীবক্ষ ভরাট হয়ে গিয়েছে। ওই পাথর তুলে বিক্রি করতে পারলেই তো টেটোপাড়ার অর্থনীতি কয়েক বছরের মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে।”
এছাড়া এলাকার অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ সুপারি চাষের উন্নয়নের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। শালপাতার মতো সুপারি গাছে খোল থেকে পাতা তৈরির কুটির শিল্প গড়ে দেওয়ার আবেদন করেছেন তিনি। কালের বিবর্তনে টোটো সংস্কৃতির অনেক নিদর্শন আজ হারিয়ে যাওয়ার মুখে।
তাঁর কথায়, “সে সব জিনিসকে সংরক্ষণের জন্যে দিদি যদি এখানে একটি মিউজিয়াম গড়ে দেন, তবে কৃতজ্ঞ থাকব।” তিনি বলেন, “আমি জানি, বেশ খানিকটা অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়েও দিদি রাজ্যের উন্নয়ন করে চলেছেন। তাই আমি কখনই দিদির কাছে দাবি করব না যে, তিনি ৪০০-৫০০ কোটি টাকা খরচ করে তিতি, বাঙরি ও হাউরি নদীর উপর সেতু গড়ে দিন। ওই আর্জি নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীকে মেল করেছি। কিন্তু ছোটো ছোটো কালভার্ট তৈরি করে দেওয়ার ক্ষমতা তো দিদির আছে। সাঁকো যেন বাংলার প্রতীক হয়ে উঠেছে। আমি চাই দিদির হাত ধরেই রাজ্যের ওই বদনাম ঘুচুক।”
ধনীরাম টোটোর ওই ইচ্ছে প্রসঙ্গে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “আমি যথাস্থানে ওঁর ইচ্ছের কথা তুলে ধরব। ওঁর দাবিগুলোর কথাও জানাব।”