Fungal Infection : গাছের সংক্রমণ মানবদেহে, প্রথম কলকাতায় – fungal infection in human body first time in kolkat


এই সময়: সংক্রমণটা বরাবর গাছেরই হয়। কোনও প্রাণীর এমন সংক্রমণের কথা শোনা যায়নি এতদিন। কিন্তু এমন ব্যতিক্রমী ঘটনারই খোঁজ মিলল খাস কলকাতায়। ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তির শরীরে ধরা পড়েছে উদ্ভীদজাত ছত্রাকঘটিত সেই সংক্রমণ।

বিশ্বেই এমন নজির প্রথম। বিষয়টি ছাপা হয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বিজ্ঞানপত্রিকা ‘মেডিক্যাল মাইকোলজি কেস রিপোর্টস’ জার্নালে। সেই সূত্রেই সামনে এসেছে এমন চমকপ্রদ তথ্য।

Covid Cases In India : লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার গ্রাফ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজারের গণ্ডি পেরোল
ছত্রাক সংক্রমণটির নাম, ‘সিলভার লিফ’। এতে গাছের পাতার রং ক্রমে রুপোলি হয়ে যায়। নেপথ্যে থাকে কন্ড্রোস্টেরিয়াম পারপিউরিয়াম নামে একটি ছত্রাক। মূলত গোলাপ প্রজাতির গাছে এই সংক্রমণ বেশি দেখা যায়।

৬১ বছরের ওই প্রৌঢ়ের শরীরেও ২০১৯-এ আশ্চর্যজনক ভাবে এই ছত্রাকের সংক্রমণ চিহ্নিত হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। পেশায় উদ্ভিদ-ছত্রাক বিশেষজ্ঞ ওই ব্যক্তি মূলত শ্বাসকষ্ট, বদলে যাওয়া কণ্ঠস্বর, কাশি, ফ্যারিঙ্গসে প্রদাহ, ক্লান্তি, খাবার গেলার সমস্যা ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সমস্যাগুলো মাস তিনেক ধরে তাঁকে ভোগাচ্ছিল। মাইক্রোস্কোপি ও কালচারে সংক্রমণের স্বরূপ বোঝা যায়নি।

সেই বিষয়টিই গবেষণাপত্রের আকারে জার্নালে তুলে ধরেন অ্যাপোলোর দুই মাইক্রোবায়োলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সোমা দত্ত ও উজ্জ্বয়িনী রায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই ব্যক্তির সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে, তাঁর শ্বাসনালীর পাশে একটি ঘা (প্যারা-ট্র্যাকিয়াল অ্যাবসেস) রয়েছে। প্রথাগত স্বাস্থ্যপরীক্ষায় নেপথ্যে থাকা জীবাণুকে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না।

Alipurduar News : শূন্য ব্লাডব্যাঙ্ক, পরিদর্শনে এসে রক্ত দিলেন খোদ মহকুমাশাসক
শেষে জিন বিশ্লেষণে বোঝা যায়, সংক্রমণটা আদতে কন্ড্রোস্টেরিয়াম পারপিউরিয়াম ছত্রাকের। অবাক হয়ে যান চিকিৎসকরা। কারণ, এই সংক্রমণ অতীতে শুধুমাত্র গাছেই দেখা গিয়েছে। এবং উদ্ভিদের জন্য এই সংক্রমণ প্রাণঘাতী।

উজ্জ্বয়িনী রবিবার ‘এই সময়’কে জানান, মাস তিনেকের চিকিৎসায় রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। চিকিৎসা বলতে প্রথমে ঘায়ের পুঁজ-রক্ত ড্রেন করে বের করে নেওয়া এবং তার পর লম্বা সময়ের জন্য অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ। তিনি বলেন, “রোগ, সংক্রমণ চিহ্নিত করা এবং চিকিৎসায় সারিয়ে তোলার বিষয়ের প্রামাণ্য নথি-সহ সংরক্ষণ করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে গবেষণাপত্র লেখা হয়ে ওঠেনি। গত বছর ছত্রাকবিদ্যা (মাইকোলজি) সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সম্মলেনে কেসটি উপস্থাপন করি। তার পরেই গবেষণাপত্র লেখা হয় এবং সম্প্রতি তা প্রকাশিত হয় জার্নালে।”

Corona Situation In West Bengal : করোনায় বেশি কাবু তরুণরা, গুরুত্ব বুস্টারে
গবেষকরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে প্ল্যান্ট মাইকোলজি নিয়ে কাজ করেছেন ওই প্রৌঢ়। সম্ভবত সেখান থেকেই সংক্রমণ। এখন তিনি ভালো আছেন। ডায়াবিটিস, এইচআইভি কিংবা কিডনি বা অন্য কোনও অঙ্গের পুরোনা অসুখ এবং ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ না-খাওয়া ও শরীরের কোথাও কোনও আঘাত না-থাকার কারণে তিন মাসেই সম্পূর্ণ সেরে ওঠেন ষাটোর্ধ্ব ওই রোগী।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *