ঠিক কী কী সুবিধে থাকবে ওই প্যাকেজ পর্যটনে?
জলদাপাড়ায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিকটবর্তী স্টেশন অথবা বিমানবন্দর থেকে নিজেদের পরিকাঠামো ব্যবহার করে নিয়ে আসবে বন দপ্তর। সফর শেষে ফের তাঁদের গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার জন্যে স্টেশন অথবা বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া হবে। সঙ্গে থাকবে খাবার, থাকার সুব্যবস্থা, হাতি ও জিপসি সাফারি করার সুযোগ।
অর্থাৎ বন ও পর্যটন দপ্তরের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে ঘরে বসেই একটি ক্লিকে ওই বনপর্যটন প্যাকেজের আওতায় আসতে পারবেন ইচ্ছুক পর্যটকরা। যার জন্যে গুনতে হবে বন দপ্তরের নির্দিষ্ট করে দেওয়া টাকা। তবে এই বন পর্যটন প্যাকেজের জন্যে ঠিক কত টাকা মাথাপিছু খরচ করতে হবে, তা আগামী পনেরো দিনের মধ্যেই জানিয়ে দেবে বন দপ্তর।
মঙ্গলবার মাদারিহাটের প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্রে রাজ্যের শীর্ষ বনকর্তা ও জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর বন দপ্তরের ওই নয়া পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ধীরে ধীরে বন পর্যটনের এই নয়া মডেলকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে সারা রাজ্যে।
এছাড়াও এখন থেকে জিপসি ও হাতি সাফারির বুকিং করার সঙ্গে সঙ্গেই পর্যটকরা চলে আসবেন বিমার আওতায়। জঙ্গলে ঘোরার সময় আচমকা বন্যপ্রাণীর আক্রমণে কোনও পর্যটক আহত হলে বা মারা গেলে পর্যটক পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে ওই বিমারাশি। যার জন্যে পর্যটকদের মাথাপিছু গুনতে হবে সর্বোচ্চ ত্রিশ টাকা। মাহুত, জিপসি চালক ও গাইডদেরও বিমার আওতায় আনবে বন দপ্তর। ইতিমধ্যেই দেশের একটি বিখ্যাত বিমা কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ দিন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘জঙ্গল পর্যটনকে আরও জনপ্রিয় করতে ও পর্যটক থেকে শুরু করে মাহুত, জিপসি চালক ও গাইডদের নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতেই আমরা এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আপনারা সবাই জানেন যে, সম্প্রতি জলদাপাড়ায় জিপসি সাফারিতে বেরিয়ে গন্ডারের মুখে পড়ে যান একদল পর্যটক। তাতেই বিপত্তি ঘটে। ফলে আমরা আর ঝুঁকি নিতে চাইছি না।’
এছাড়াও তিনি জানান যে, জঙ্গলের নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল কিনতে ইছাপুর গান ফ্যাক্টরিতে চল্লিশ লক্ষ টাকা জমা করেছে বন দপ্তর। দ্রুত ওই অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র বনরক্ষীদের হাতে তুলে দিতে পারবে বন দপ্তর। এর সঙ্গে বনমন্ত্রী সংযোজন করেন ‘জলদাপাড়া ও বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্যে পরিবেশ আদালতের অনুমতি নিয়ে দুই জায়গায় কমপক্ষে ১৪টি অত্যাধুনিক বনবাংলো তৈরি করা হবে। যেখানে থাকবে জিম করবেট টাইগার রিজার্ভের মতো প্রেক্ষাগৃহ। ওই প্রেক্ষাগৃহগুলিতে নিয়মিত ভাবে বন্যপ্রাণ ভিত্তিক নামকরা সিনেমাগুলি দেখানো হবে পর্যটকদের।’