Buxa Tiger Reserve : বক্সার ছবির বাঘ আসলে পরিযায়ী, মানলেন বনকর্তা – tiger in buxa tiger reserve is migrant said forest officers


এই সময়, আলিপুরদুয়ার: তাহলে কি কার্যত বাঘশূন্যই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প? রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্তের কথায় তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। গত ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের গভীরে ত্রিশ বছরের খরা কাটিয়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পড়েছিল এক পূর্ণবয়স্ক পুরুষ দক্ষিণরায়ের ছবি।

Buxa Tiger Reserve Forest : বন সুরক্ষায় এবার নামছে বাইক বাহিনী, দাপিয়ে বেড়াবে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ব্লগে সে দিনই ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি প্রকাশ করা হয়। তা নিয়ে রাজ্য তো বটেই, দেশ জুড়েও কম হইচই হয়নি। রাজ্য বন দপ্তরের তরফে দাবি করা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত বাঘশূন্য বক্সার বদনাম ঘুচল। যদিও ওই দিনের পর আর সেই ডোরাকাটার দর্শন মেলেনি।

এত দিন বনকর্তারা দাবি করে আসছিলেন যে, বক্সার জঙ্গলের গভীরে বাঘটির উপস্থিতির প্রচুর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসে মঙ্গলবার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে এক সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্ত জানিয়ে দেন, ‘বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে যে বাঘের দেখা মিলেছিল, আদতে ওই বাঘটি এখানকার আবাসিক নয়, বরং সে পরিযায়ী।

Alipurduar News : শৌচকর্ম করতেও জীবনের ঝুঁকি, পদে পদে মৃত্যুর ভয়! আলিপুরদুয়ারে গ্রামে অবাক করা ছবি
আমাদের ধারণা, প্রতিবেশী রাজ্য অসমের রাইমোনা জাতীয় উদ্যান থেকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব দিকের ঘোলানি নদী পার করে বাঘটি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে চলে এসেছিল।’ তবে তিনি এ-ও দাবি করেন যে, ‘বাঘটি আদর্শ পরিবেশের খোঁজ পেয়ে মাঝেমধ্যেই রাইমোনা থেকে বক্সার জঙ্গলে চক্কর কেটে যাচ্ছে।’ কারণ রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে থাকা ঘোলানি নদী পেরিয়ে সামান্য এগোলেই শুরু হয়ে যায় অসমের রাইমোনা জাতীয় উদ্যান।

Jaldapara Jungle Safari : জলদাপাড়ায় এবার প্যাকেজ জঙ্গল পর্যটন, থাকছে সাফারি-থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
যেখানে ২০২১ সাল থেকে বেশ কিছু বাঘের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তারপর ২০২২ সালে ওই জাতীয় উদ্যানকে ‘ব্যাঘ্র প্রকল্প’-এর মর্যাদা দেয় দেশের একমাত্র কেন্দ্রীয় বাঘ সংরক্ষক সংস্থা ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি। বাঘ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, অসমের রাইমোনা ও বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের চরিত্রে প্রচুর মিল থাকার কারণেই পরিযায়ী বাঘেরা খাবারের খোঁজে বক্সার জঙ্গলে যাতায়াত শুরু করেছে।

Rhino Poaching: কোথায় লুকিয়ে গণ্ডার চোরাশিকার চক্রের কিং পিন? হন্যে হয়ে খুঁজছে টাস্ক ফোর্স
ইতিপূর্বেই অবশ্য রাজ্য বন দপ্তরের আবেদনে সাড়া দিয়ে বক্সার হৃতগৌরবকে ফিরিয়ে আনতে ওই সংরক্ষিত অরণ্যে ভিনরাজ্য থেকে বাঘ নিয়ে আসার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি। বর্তমানে যার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। ওই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে বক্সায় বাঘেদের খাদ্য তালিকায় একদম উপরে থাকা চিতল হরিণদের রাজ্যের অন্যন্য বনাঞ্চল থেকে বক্সায় পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে।

Alipurduar Tourism : গজরাজ হাঁটবেন নিশ্চিন্ত মনে! উত্তরবঙ্গে আরও ৭টি হাতির করিডোর বানাচ্ছে বন দফতর
গত তিন বছরে ধাপে ধাপে সাতশোরও বেশি চিতল হরিণ আনা হয়েছে বক্সার জঙ্গলে। এছাড়াও বাঘ সংরক্ষণের অঙ্গ হিসেবে বক্সার পাথুরে জমিতে তৈরি করা হয়েছে বিস্তীর্ণ তৃণভূমি। কারণ অসমের বিখ্যাত বাঘবনগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ওই গভীর তৃণভূমি। যেখানে সংসার পাততে অভ্যস্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শার্দুল মহারাজরা।

Alipurduar News : মাঝরাতে হাতি দেখার শখ, হাত ছিঁড়ে নিল গজরাজ!
সৌমিত্র দাশগুপ্ত বলেন, ‘বাঘ আনা হবে বললেই তা সম্ভব নয়। তার জন্যে সময়, আদর্শ পরিবেশ তৈরি করা ও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন। তাই আমরা বক্সাকে তৈরি করতে গ্লোবাল টাইগার ফোরাম, ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি ও বাঘ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়মিত ভাবে যোগাযোগ রেখে চলেছি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *