ভালো প্রকল্প এবং তা বাস্তবায়িত করতে যে সব সরকারি অফিসার ও কর্মী দিনরাত এক করে কাজ করেছেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কোন জেলায় কোন প্রকল্পে কী সাফল্য এসেছে, তার তালিকা চেয়েছিল নবান্ন। সুসংহত উন্নয়নের জন্য মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক বিকাশে নজির তৈরির ক্ষেত্রে ২০টি প্রকল্পকে সেরার স্বীকৃতি দিল নবান্ন।
তালিকায় বাঁকুড়ার ‘অপারেশন অপুষ্টি’ থেকে হুগলির বেকারদের কর্মসংস্থানে ‘উত্তরণ’, বীরভূমের ‘আনন্দপাঠ’, আলিপুরদুয়ারের দুর্গম বক্সার অসুস্থ ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ‘পালকি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা’ সেরার স্বীকৃতির তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে। এই প্রকল্পগুলি রূপায়ণে সরকারি ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের নাম উল্লেখ করে সম্মান জানানো হয়েছে।
যা এক নয়া নজির। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এই প্রকল্পগুলি মডেল বা রেপ্লিকা করে জেলায় জেলায় সরকারি কর্মীদের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। নবান্ন সূত্রের খবর, জেলাশাসকদের বলা হয়েছিল, বিভিন্ন প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের নাম সমন্বয় পোর্টালে তুলতে হবে। সেইসঙ্গে জেলাশাসকদের নজরে কোনটি সেরা প্রকল্প, তা-ও জানাতে হবে। সেইমতো ১৩০টি রিপোর্ট জমা পড়ে।
নবান্নের কর্তাদের কথায়, কন্যাশ্রী-সহ রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্প জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকস্তরে স্বীকৃতি আদায় করেছে। কিন্তু এই সব প্রকল্প রূপায়ণে যে সরকারি কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম থাকে, তাঁদের জন্য আলাদা করে কোনও স্বীকৃতি বা পুরস্কারের ব্যবস্থা ছিল না। সুযোগও ছিল না। এই প্রথম রাজ্য সরকার তাঁদের স্বীকৃতি দিল। নবান্নের বিশ্বাস, এর ফলে তথাকথিত ফাঁকিবাজ কর্মীরাও কাজে অনুপ্রাণিত হবেন।
একটি প্রকল্পকে জনমুখী করতে গেলে প্রশাসনকে নানা ভাবে পরিকল্পনা করতে হয়। সর্বদা একটি প্রকল্পের নানা ক্ষেত্রে সব খরচের আইনমাফিক সংস্থানও করা যায় না। তখন ওই প্রকল্পের সঙ্গে অন্য দপ্তরের কর্মসূচি যুক্ত করে সেই প্রকল্পের পরিধি বাড়ানো হয়। যেমনটি করা হয়েছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটিতে অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে।
সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পে অপুষ্টির শিকার শিশুদের চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের একটি প্রকল্প। এই অপুষ্ট শিশুদের অনেকের বাবা-মা লকডাউনে কাজ হারিয়েছিলেন। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের হাঁস-মুরগি পালনের সরকারি কর্মসূচিতে তাঁদের যুক্ত করা হয়। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক এই বিষয়টি জেলাশাসকের নজরে এনে সুসংহত ভাবে প্রকল্পটি রূপায়িত করেন।