তার পাশে থাকা একটি হোটেল ম্যানেজমেন্ট কলেজের মহিলা হস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ার্ডেন শিহালি দাস বাগচী একজন পশুপ্রেমী। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তিনি দেখতে পান তাঁর কম্পাউন্ডের মধ্যে বেশ কিছু সারমেয়র গায়ে সজারুর কাঁটা বিঁধে রয়েছে এবং তারা যন্ত্রণায় ছটফট করছে।
তিনি সেই সারমেয়দের শুশ্রূষা করে খোঁজ নিয়ে দেখেন, তার কম্পাউন্ডের প্রাচীরের ধারেই ওই বেসরকারি স্কুলের কম্পাউন্ডের একটি ম্যানহোল খোলা রয়েছে এবং সারমেয়দের তাড়া খেয়ে একটি সজারু সেই ম্যানহোলের ভিতরে প্রায় ৯৫ শতাংশ ঢুকে গিয়েছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বন দফতরকে খবর দেন এবং অন্যান্যদেরও জানান বিষয়টি।
দুর্গাপুর বন দফতরের মুখ্য বনাধিকারী বুদ্ধদেব মণ্ডল তৎক্ষণাৎ দমকল বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বন দফতরের টিমের তৎপরতায় সজারুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন দমকল কর্মীরা। বিকেলে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলে এই অপারেশন। তার জন্য ওই বেসরকারি কলেজ এবং বেসরকারি স্কুলের দেওয়াল সহ পাইপ লাইনের কিছু অংশ ভাঙতেও হয় এবং সজারুটিকে জীবিত ভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
এই মুহূর্তে তাকে রাখা হয়েছে দুর্গাপুরের বন দফতরের অফিসে। আগামীকাল সজারুটিকে কাঁকসার জঙ্গলমহলে ছেড়ে দেওয়া হবে। দুর্গাপুরের মুখ্য বন আধিকারিক বুদ্ধদেব মণ্ডল জানান, “একজন মহিলার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং অবলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাণী এবং পশুদের প্রতি ভালোবাসা একটি সজারুকে জীবন ফিরিয়ে দিল।
শহরের প্রতিটি মানুষ যদি এরকম সচেতন হন তাহলে এইরকম হাজার হাজার প্রাণী যারা অবলুপ্তের পথে তারা রক্ষা পাবে”। অন্যদিকে ওই মহিলা ওয়ার্ডেন শিহালি দাস বাগচী জানান, “এটা আমার সামাজিক দায়বদ্ধতা। সেই জায়গা থেকে আমি এই অসহায় সজারুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি এবং সে তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
আবার সে ফিরে যাবে জঙ্গলে। এটাই আমার কাছে সব থেকে বড় খুশির খবর”। এবং তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বন দফতর সহ দমকল বাহিনীকে। তাঁর মতে, দুর্গাপুর শহরের প্রতিটি সচেতন নাগরিক এইভাবে সচেতন হয়ে উঠুক। তাহলেই বাঁচবে দুর্গাপুর শহরের লাগোয়া এই রকম নানান অসহায় প্রাণীরা। যারা নতুন প্রজন্মের কাছে অজানা।