শ্রীজাতর প্রাণ ওষ্ঠাগত!
শুক্রবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন শ্রীজাত। যেখানে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আয়োজিত বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘সংস্কৃতির’ উপর। তিনি লেখেন, “মাঝরাত পার হয়ে গেছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎসব-এর শব্দে বাড়িতে কান পাতা যাচ্ছে না। সকাল ১১টা থেকে রাত ১২টা এই অসহ শব্দতাণ্ডব চলছে, তাদের Open Air Theatre-এ।” এই সমস্যা টানা এক সপ্তাহ ধরে ভোগ করছেন বলেও জানান কবি।
শ্রীজাতর কথায়, “শব্দের সীমাহীন প্রক্ষেপণে জানলা দরজা কাঁপছে, কান-মাথা ব্যথা করছে। আমার লেখালেখি সাতদিন হলো শিকেয়, দূর্বা কাজ থেকে ফিরে বিশ্রাম নেবার বদলে কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের কাজকর্মের কথা ছেড়ে দিলাম, বাড়িতে বয়স্ক, অসুস্থ মা আছেন। নিজের ঘরে শান্তিতে থাকতে পারছেন না।”
প্রয়োজনে পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও জানিয়েছেন কবি শ্রীজাত। তিনি বলেন, “জানি না এর কোনও প্রতিকার আছে কিনা, তবু আমি, আমরা প্রতিবাদ জানালাম। ভবিষ্যতে অন্য কোনও পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। উৎসব যদি অন্যের অশান্তির কারণ হয় এবং লাগাতার হয়েই চলে, তবে তা স্রেফ অসভ্যতা ও অন্যায়।”
কী প্রতিক্রিয়া ‘যদুবংশ’-এর
বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে চলছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ অর্থাৎ ফেটসু আয়োজিত ‘সংস্কৃতি’। প্রতিদিনই সেখানে নাচ-গান-সেলেব পারফরম্যান্সের আসর বসছে। এর আগে আফসু অর্থাৎ আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্স ইউনিয়নের ফেস্টও হয়েছে। শ্রীজাতর আপত্তি প্রসঙ্গে আফসুর প্রতিনিধি শুভায়ন মজুমদার উদ্বিগ্ন। তাঁর কথায়, “এটা সম্পূর্ণই শ্রীজাতর নিজস্ব মতামত। তবে এরকম সমস্যা যদি হয়ে থাকে, আমাদের তো মেটাতেই হবে। একটা কমন প্ল্যাটফর্মে সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের এনে আলোচনায় বসতে হবে। এরকম অভিযোগ হলে তো সেটা সমাধান করতেই হবে।”
শুভায়ন মজুমদার আরও বলেন, “গোটা বছরে কবে কবে কখন ফেস্ট হচ্ছে দেখে নিয়ে, কারও যাতে সমস্যা না হয় সেই বিষয়টায় নজর দিতে হবে। সাউন্ড আইসোলেশন করা যায় কি না, সেটাও দেখতে হবে। আমারা যাতে একটা সমাধানের দিকে যেতে পারি, সেটাই আগে দেখব। আমাদের আনন্দ যেন কারও সমস্যার কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।”

Srijato JU Sanskriti : ফেসবুকে শ্রীজাতর করা পোস্ট।
শ্রীজাতকে কটাক্ষ নেটিজেনদের
এদিকে, কবিবর পোস্টে কমেন্টের বন্যা। কেউ তাঁকে শাসকদল ঘনিষ্ঠের তকমা দিয়ে বলছেন, “তৃণমূলের অনুষ্ঠানে তারস্বরে মাইক বাজলে আপনার কান-মাথা ঝালাপালা হয় না?” কারও আবার শ্রীজাতকে পরামর্শ, “দিদি কে বলো কিংবা এক ডাকে অভিষেকে অভিযোগ করুন।” কারও কারও মতে পুলিশে অভিযোগ জানানো উচিত কবির।
অনেকেই আবার শ্রীজাতর পাশে দাঁড়িয়েছেন। সমানভাবে ভুক্তভোগী হিসেবেই অনেকেই তাঁকে সমর্থম জানিয়ে লিখেছেন, যাদবপুরের পড়ুয়ারা এমনটাই করে। সাধারণ মানুষের সমস্যা তাঁদের কর্ণগোচর হয় না। তবে এই নিয়ে আফসুর প্রতিনিধি অবশ্য মন্তব্য করতে নারাজ। তাঁর কথায়, “যারা কমেন্ট করছেন, তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত। আমাদের এতে কিছু বলার নেই। তবে শাসকদলের লোক বলে নয়, একজন সহ নাগরিক হিসেবেই শ্রীজাতর অভিযোগটিকে দেখছি। এর সমাধানের চেষ্টা করব।”