Red Sandalwood Smuggling : বঙ্গ-রুটের ‘পুষ্পা’ কে? খুঁজে চলেছে শুল্ক দফতর – last year about 2 thousand kg of red sandalwood recovered from west bengal


সোমনাথ মণ্ডল
তখন সবে সন্ধ্যা নেমেছে। হাওড়ার সাঁকরাইলে এক মুড়ির গুদামে যে যার মতো কাজে ব্যস্ত। হঠাৎ সেখানে হাজির হলেন এক অপরিচিত ব্যক্তি। তাঁকে দেখে খানিক সন্দেহ হলো গুদাম মালিকের। জানতে চাইলেন, “আপনি কি কাউকে খুঁজছেন?” রাখঢাক না করে ভদ্রলোক সটান জানিয়ে দিলেন, “হ্যাঁ, লাল চন্দনের খোঁজে এসেছি। দক্ষিণের এজেন্টের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কলকাতায় কাস্টমার আছে”!

কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লেন মুড়ির ব্যবসায়ী। বললেন, “দাদা আপনার কি মাথা খারাপ? এখানে মুড়ি বিক্রি হয়। লাল চন্দন কোথায় পাবেন!” যদিও শেষ পর্যন্ত গ্রাহকের ছদ্মবেশ ধরে সেই মুড়ির গুদাম থেকেই ৫০০ কেজি লাল চন্দনকাঠ উদ্ধার করেন শুল্ক দপ্তরের এক অফিসার।

Red Sandal Wood : জঙ্গলমহলের মাটিতেই হবে ‘পুষ্পার’র রক্তচন্দন
তার আগে হাওড়ার পিলখানা রোডে এক টনের মতো লাল চন্দন উদ্ধার হয়েছিল। কলকাতার বউবাজার এলাকা থেকেও কলকাতা পুলিশ বিপুল টাকার চন্দন কাঠের ব্লক বাজেয়াপ্ত করেছিল। শুল্ক দপ্তরের অফিসাররা প্রথমে ভেবেছিলেন, এগুলো হয়তো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

কিন্তু গত মার্চে সাঁকরাইলের মুড়ির গুদামে অভিযান চালানোর পরে তাঁরা নিশ্চিত হয়ে যান, বিদেশে বহুমূল্যবান রক্তচন্দন কাঠ পাচারের জন্য চোরাকারবারীরা বাংলার মাটিকে নিয়মিত ব্যবহার করছে। তদন্তে নেমে শুল্ক দপ্তর জানতে পেরেছে, দক্ষিণ ভারত থেকে বড় বড় কন্টেনারে রক্তচন্দনের ছোট ছোট গুঁড়ি বোঝাই হয়ে আসছে।

Red Sandalwood Smuggling : আলিপুরদুয়ারে উদ্ধার লাখ লাখ টাকার লাল চন্দন কাঠ, ধৃত ৫
তারপর দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহারের উপর দিয়ে সড়কপথে ট্রাকে করে সেই কন্টেনার-ভর্তি চোরাই রক্তচন্দন কাঠ ঢুকছে হাওড়া এবং হুগলি শিল্পাঞ্চলে। সেখান থেকে হাতবদল হয়ে কলকাতা-শিলিগুড়ি রুট ধরে চলে যাচ্ছে নেপাল কিংবা ভুটানে।

গত দেড় বছরে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২ হাজার কেজি রক্তচন্দন উদ্ধার হয়েছে বলে শুল্ক দপ্তর সূত্রের খবর। কয়েকজনকে লরিচালক এবং খালাসিকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু আসল মাথাকে ধরা যায়নি।

শুল্ক অফিসাররা নিশ্চিত, বাংলার রুট দিয়ে রক্তচন্দন কাঠের যে চোরাচালান হচ্ছে, তার পিছনে স্থানীয় কোনও বড় মাথা রয়েছে, যে পুষ্পা সিনেমার নায়কের মতো আড়াল থেকে এই অবৈধ কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে।

Siliguri News : কোটি কোটি টাকার সোনা পাচার করতে অভিনব পাইপ তৈরি, শেষ রক্ষা হল না অভিযুক্তদের
এক শুল্ক অফিসারের কথায়, “সিনেমার পুষ্পার সঙ্গে বাস্তবের পুষ্পার অনেক ফারাক। তাই তার টিকির সন্ধান পাওয়া সহজ নয়। কারণ, অনেক হাতফেরি হয়ে কাঠ এখানে আসে। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *